নওগাঁয় ইটভাটা মালিক-শ্রমিকের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন
নওগাঁ প্রতিনিধি: বৈধ কাগজপত্রধারী ইটভাটা চালু রাখার দাবিতে নওগাঁয় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ইটভাটার মালিক ও শ্রমিকেরা। আজ রোববার দুপুরে নওগাঁ জেলা ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির উদ্যোগে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন শেষে বৈধ কাগজপত্রধারী ইটভাটাকে পরিবেশের ছাড়পত্র প্রদান ও ভাটায় ইট পোড়ানোর দাবিতে ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও নওগাঁ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টার পর থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকেরা খন্ডখন্ড মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়।
এ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সদস্য ও মান্দা উপজেলা ইটপ্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সভাপতি মোখলেছুর রহমান।
সমাবেশে নওগাঁ জেলা ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর-ই আলম মিঠু, সহ-সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ সাজেদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, ভাটা মালিকেরা নিজেদের অর্থ বিনিয়োগ করে বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও প্রায় ১০ বছর ধরে ইটভাটাগুলোকে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশের ছাড়পত্র নবায়ন করা হচ্ছে না। নাবয়নের আবেদন দেওয়া সত্ত্বেও ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না। এরপরেও গত বছরগুলোতে ভাটা মালিকেরা স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাঁদের ভাটায় ইট প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশের ছাড়পত্র নেই এমন ভাটাগুলোতে ভাটা বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এভাবে একযোগে ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হলে ভাটা মালিক ও সেগুলোতে কর্মরত শ্রমিকেরা বিপাকে পড়ে যাবেন। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় রেখে চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানো অনুমতি দেওয়ার আবেদন জানান ভাটা মালিক ও শ্রমিকেরা।
নওগাঁ জেলা ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর-ই আলম বলেন, ‘নওগাঁতে বর্তমানে ১৩০টির মতো ইটভাটা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২৩টির পরিবেশের ছাড়পত্র রয়েছে। বাকিরা সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও ২০১৯ সালের পর থেকে পরিবেশের ছাড়পত্র পায়নি। একেকটি ইটভাটায় কমপক্ষে ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এছাড়া প্রতিটি ইটভাটার মালিক চলতি মৌসুমে ইট উৎপাদনের জন্য ইতোমধ্যে ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিযোগ করে ফেলেছেন। নওগাঁতে একশোরও বেশি ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই। চলতি মৌসুমে এসব ভাটায় ইট পোড়ানো না হলে এর মালিক এবং এসব ভাটায় কর্মরত শ্রমিকেরা পথে বসবে। নওগাঁর সকল ইটভাটা চালু রাখার জন্য বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের কাছে আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি। ’
সমাবেশ শেষে ইটভাটা চালু রাখার দাবিতে জেলা ইটা প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল কার্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় তাঁর পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাবির্ক) সাদিয়া আফরিন। জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের পর পরিবেশ অধিদপ্তর নওগাঁর সহকারী পরিচালক নাজমুল হোসাইনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির প্রতিনিধি দল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর নওগাঁর সহকারী পরিচালক নাজমুল হোসাইন বলেন, যেসব ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র নেই হাইকোর্টের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সব ইটভাটা ইট প্রস্তুত কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইটভাটাগুলো চালু থাকবে কিনা এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পাওয়ার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।