রবিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সড়ক দুর্ঘটনায় দু’পা হারিয়ে কর্মহীন রায়গঞ্জের রফিকুল, সংকটে শিশুপুত্রের পড়াশোনা

সাইদুল ইসলাম আবির, রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুটি পা হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে এক বাসচালকের সহকারী। আর্থিক সংকটে তার এক স্কুলপড়ুয়া সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। রফিকুল উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের তবাড়িপাড়া এলাকার বাসিন্দা। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তার সংসার।

প্রায় চার মাস আগে টাঙ্গাইল এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন রফিকুল। প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেওয়ার পর অবস্থা গুরুতর হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে বাঁচার আশায় তার দুটি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন স্বজনরা।

দুর্ঘটনার আগে রফিকুল ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার কর্মক্ষমতা হারানোর পর থেকে পরিবারটিতে নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার অন্ধকার। তার স্ত্রী সেফালি বেগম বলেন, “চিকিৎসার খরচ, ঋণ, সংসার—সব মিলিয়ে এখন দিশেহারা। ছেলেকে স্কুলে পাঠানোও এখন কষ্ট হয়ে গেছে। কোনও সাহায্য না পেলে তার সন্তানের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।

” তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে স্বামীর চলাফেরার জন্য একটি হুইলচেয়ার প্রয়োজন। চিকিৎসক কৃত্রিম পা লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন, কিন্তু খরচ লাখ টাকার উপরে—আমরা কোথা থেকে আনবো? তাই সরকার এবং সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা চাই।” রফিকুলের ছেলে সিয়াম (ছদ্ম), ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে সে জানায়, “বাবা কাজ করতে পারে না।

স্কুলে যেতে পারবো কি না মনে মনে ভয় লাগে।” চোখের পানি আটকিয়ে সে আরও বলে, “সবাই স্কুলে যায়—আমিও যেতে চাই। কিন্তু পড়াশোনা চালাতে না পারলে কী হবে জানি না।” স্থানীয় এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, “সিয়াম খুব মেধাবী শিক্ষার্থী। অভাবের কারণে তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক হবে। তাদের সহায়তা জরুরি।” রায়গঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস হাসান শেখ বলেন, “এই পরিবারের বিষয়ে আমরা এ অবগত হয়েছি।

প্রতিবন্ধী ভাতা ও পুনর্বাসনসহ সরকারি সহায়তা প্রদানের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা হবে।” স্থানীয়রা জানান, কেবল সরকারি সহায়তা নয়, সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এলে পরিবারটি আবারও দাঁড়াতে পারবে। দুর্ঘটনার পর রফিকুলের জীবন থমকে গেছে, তবে তার সন্তানদের ভবিষ্যৎ এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—তারা কি আর স্কুলে ফিরতে পারবে?এখন সমাধান একটাই—কেউ কি তাদের পাশে দাড়াবে?

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়