হাসপাতালে আগুন, ডাক্তারের দুরদর্শিতার প্রাণে বাঁচলো প্রসূতী ও নবজাতক শিশু
জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারে গর্ভবতী এক নারীর সিজার অপারেশন চলাকালীন সময়ে পাশেই স্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রোগী ডাক্তার ও নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে অপারেশন থিয়েটারের গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাশেদা পারভীন মুন্নীর দুরদর্শিতায় প্রাণে বেঁচে গেলো প্রসুতী নারী ও নবজাত শিশু।
সোমবার ( ৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার স্টোর রুমে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে স্টোর রুমে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। তবে কোনোও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার দেবাশীষ রাজবংশী জানান: উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারে একজন গর্ভবর্তী নারীর সিজার অপারেশন চলছিল।
এ সময় বেলা ১১টার দিকে অপারেশন থিয়েটারের পাশেই স্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন পুরো স্টোর রুমে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় হাসপাতালে রোগী ও স্বজনরা ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। পরবর্তীতে ডাক্তার নার্স সকলেই মিলে অপারেশনকৃত রুগি ও নবজাতককে নিরাপদস্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষ্যম হয়।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ নেয়। অপারেশন থিয়োটারের কর্তব্যরত গাইনী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রাশেদা পারভীন মুন্নী জানান, সোমবার সকাল পনে ১১টায় অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে অপারেশন করার সকল প্রস্তুতি শেষ করে একজন গর্ভবতী নারীর সিজার অপারেশন শুরু করা হয়। নবজাত একটি শিশু বের করার পর বাহিরে আগুন আগুন করে সবাই চিৎকার করছে এমনটা শুনতে পাই।
অপারেশন থিয়েটারে সবাইকে ধৈর্য ধরে সিজারের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলেন তিনি। এরপর নবজাত সন্তানকে নার্সের কাছে দিয়ে সাথে আরো একজনসহ বাহিরে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর নবজাত সন্তানের মাকে নিয়ে তারা বের হয়। এদিকে চারপাশ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকায় কৌশলে তারা রোগীকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে আসে। তিনি আরো বলেন, অপারেশন থিয়েটারের বাহিরে যখন তাকিয়ে দেখি শুধু আগুনের ধোঁয়া সাড়া আর কিছু দেখা যায়নি। বাহিরের সবাই নিজেকে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে।
কাউকে ডেকেও পাওয়া যায়নি। এমন ঘটনার মধ্যে গর্ভবতী মাকে সফল অপারেশন করানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল। অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে থাকা সকলের সহযোগিতাই এটি সম্ভব হয়েছে। নবজাত সন্তান ও তার মা এখন সুস্থ রয়েছেন বলে জানান তিনি। উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন মাষ্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনসাধারণ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
তবে বৈদ্যুতিক শক সার্কিট এর কারনে অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন তিনি। তাৎক্ষনিক ঘটনারস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহছেন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক ভাবে আমরা বৈদ্যুতিক শক সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারনা করছি। ঘটনা সঠিক তদন্তের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।


সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।