রবিবার, ২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

যমুনা রেলসেতুতে ফাটল নিয়ে গুজব

আখতার হোসেন খান, ভুঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: যমুনা  রেলসেতুতে ফাটল নিয়ে গুজব ছড়িঢয় পড়েছে।  বিভিন্ন অনলাইন, পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে যে ফাটল বা ভাঙা দেখানো হয়েছে। সরেজমিনে বড় ধরণের কোনো ফাটলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে সেতুর পিলারে কোনো স্পট নেই, তবে পায়ার ক্যাপে ফাটল সদৃশ কিছু চিঁরচিঁরে অবস্থা দেখা যায়। গত ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন করা হয়। মাত্র ৭ মাসেই রেলসেতুতে ফাটলের অভিযোগ ওঠে এবং তা কয়েকটি পত্রিকা প্রচার করলে গুজবটি ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয় গুজবকারীরা রেলসেতু ভেঙে পড়ার ছবিও ব্যবহার করে।

চিঁরচিঁরে ভাবটি আদৌ ফাটল কিনা তা খতিয়ে দেখবেন সেতুকর্র্তৃ পক্ষ। সরেজমিনে দেখা যায় সেতুর পিলারে কোনো স্পট নেই, তবে পায়ার ক্যাপে ফাটল সদৃশ কিছু চিঁরচিঁরে দেখাযায়। প্রকল্প পরিচালক আবু ফাত্তাহ বলেন, পায়ারক্যাপে ঢালাইয়ের ওপরে একটি আস্তরণ আছে যাতে কিছুটা চিঁরচিঁরে ধেখা গেছ্।ে সেটি মূল সেতুতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাথর শক্তিশালী এবং ক্ষয় সহিঞ্চু তবে তাপমাত্রা বেশি হলে ওপরের স্তরে এমনটি হতে পারে। এই রেলসেতুতে আসা যাওয়ার দুটি লাইন (ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাক) রয়েছে।

গত ১২ ফেব্রæয়ারি থেকেই নতুন সেতুর একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ বলেন, মূল সেতু পার হতে ট্রেনে লাগবে দুই-তিন মিনিট। সেতুর দুই পাড়ের স্টেশন সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদের মধ্যে দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার। এই অংশ পার হতে ৭ মিনিটের বেশি লাগে।

আগে যমুনা সড়কসেতু পার হতে ট্রেনের সময় লাগত ২০-২৫ মিনিট। ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর সড়কসেতু চালু হয়। ওই সেতুতে শেষ মুহূর্তে রেল ট্র্যাক যুক্ত করা হয়। এর মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৬ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ার পর সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। তখন থেকে সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করত।

এ সমস্যার সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর পৃথক রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলসেতু নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। ২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৫ সাল পর্যন্ত। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলসেতু নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।

২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল তা শেষ না হওয়ায় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নাম পাল্টে যমুনা রেলসেতু রাখা হয়।

নতুন রেলসেতু ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যানে নির্মিত হয়েছে। এই সেতুতে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও সেতুর সংযোগ লাইন সিংগেল হওয়ায় ধীর গতিতে চলছে ট্রেন।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়