শনিবার, ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

উল্লাপাড়ায় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির কর্মীবান্ধব জনপ্রিয় নেতাদের পদের স্থগিতাদেশ প্রত্যহার চায় নেতাকর্মীরা

বিশেষ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সংসদ নির্বাচনের আগেই উপজেলা বিএনপির কর্মীবান্ধব জনপ্রিয় নেতাদের পদের স্থগিতাদেশ প্রত্যহার চায় তৃর্ণমূল নেতাকর্মীরা। পদ স্থগিত হওয়া নেতারা হচ্ছেন- উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি,২ বারের নির্বাচিত সাবক মেয়র এম.বেলাল হোসেন,উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ন আহ্বাহক হেলাল সরকার সহ ৭ নেতা।

দলটির  তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলছেন,প্রতিটি নির্বাচনে এসব নেতারা নিজেদের প্রার্থীদের জেতাতে ভোটের মাঠে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকেন। কর্মীদের সাথে তাদের রয়েছে গভীর যোগাযোগ।  তাদের সাহসী  নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ নেতাকর্মীরা বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছেন।

এ কারনে সংসদ নির্বাচনের আগে তাদের পদের স্থগিতাদেশ প্রত্যহার করে দলে সক্রিয় করে নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে জেলা এবং কেন্দ্রীয় নেতারা দ্রুত উদ্দ্যোগ নেবেন এমনটাই মনে করছেন মাঠের কর্মীরা। উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,চলতি বছরের ২ মে এ উপজেলার একটি গ্রুপের মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা বিএনপি  উপজেলা বিএনপির ৭ নেতার প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ স্থগিত করেন।

এসব নেতারা হলের পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ২ বারের বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র এম বেলাল হোসেন,উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক হেলাল সরকার,পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য আশরাফুল ইসলাম মিন্টু,পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মুকুল হোসেন,পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন বিএনপির সবেক সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী,বড়হর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন আহ্বাহক সাখাওয়াত হোসেন সাবু ও উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য মোঃ মিজানুর রহমান।

এসব নেতারা সবাই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে উল্লাপাড়া আসনে এবারের বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত এম.আকবর আলীর পক্ষ হয়ে কাজ করছিলেন। অপর মনোনয়ন প্রত্যশীরা এম আকবর আলীকে ঠেকাতে এসব জনপ্রিয় নেতাদের নামে মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে কৌশলে দল থেকে সরিয়ে দেন। যাতে করে তাদের সুবিধা হয়। জেলা বিএনপি ওই অভিযোগের মাঠ পর্যায়ে সঠিক তথ্য প্রমান না নিয়েই কেন্দ্রের সাথে কথা বলে তড়িঘড়ি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত সাংতঠনিক সিদ্ধান্ত নেন।

এমনকি এসব নেতাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এরপর থেকে এ উপজেলায় বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে।  বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি হয়েছে। যা আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে প্রভাব ফেলতে পারে। পদ স্থগিত হওয়ার পর এসব নেতারা স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদে ফিরিয়ে নেবার জন্য কেন্দ্রীয় এবং জেলা বিএনপি নেতাদের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপির একাধিক  নেতাকর্মী অভিযোগ করেন, বিগত সরকার পতনের পর এ উপজেলায় যেসব নেতারা প্রকাশ্য চাঁদাবাজি,মানুষের বাড়িঘরে লুটপাট করেছে তারা দলের পদে বহাল রয়েছে। বিগত নির্বাচনে ওই নেতারা গোপনে নিজ দলের প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ কটেছেন।

নতুন করে পর্দার পিছন থেকে জেলা এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের ব্যবহার করে উপজেলা বিএনপির বিগত দিনের ত্যাগী,নির্যাতিত নেতাদের নামে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছে। যা এ উপজেলার বিএনপির রাজনীতিকে দূর্বল করে দিচ্ছে।  পদ স্থগিত হওয়া নেতাদের মধ্যে এম.বেলাল হোসেন উল্লাপাড়ায় সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের  কাছে ক্লিন ইমেজের জনপ্রিয় নেতা হিসাবে পরিচিত।

তিনি ৮০ দশকে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের নির্বাচিত ভিপি,জিএস ছিলেন। উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির কয়েকবার সভাপতির এবং উল্লাপাড়া পৌরসভার ২ বারের বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র। বিগত দিনে  তিনি নিজ বাড়িতে থাকতে পারেননি। মসজিদ থেকে আটক করা হয়। ৩ বার জেল হাজতে যান।  আর অপর নেতা হেলাল সরকার ৮৩ সাল থেকে ছাত্রদল,যুবদলের উপজেলার নেতৃত্ব দেয়া সহ উপজেলা বিএনপির নির্বাচিত সাংগঠনিক,যুগ্ন সম্পাদক এবং সর্বশেষ পদ স্থগিত হওয়া পর্যন্ত উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। পতিত সরকারের আমলে ৪২ টি গায়েবি মামলায় তাকে আসামী করা হয়। কয়েক বার রিমান্ডে এনে নির্যাতন করা হয়। জেল হাজত খেটেছেন অসংখ্যা বার।

এসব নেতারা এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়,ত্যাগী এবং নির্যাতিত। মাঠের নেতাকর্মীদের সাথে রয়েছে তাদের গভীর সম্পর্ক। কর্মীদের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানো সহ বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনকে তারা গঠন করেছেন। নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। সংসদ নির্বাচন সহ প্রতিটি নির্বাচনে মাঠের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ,সংগঠিত করে তারা বিজয় উপহার দিয়েছেন। মাঠের কর্মীদের যারা যুগ যুগ ধরে বুকে আগলে রেখে দলকে শক্তিশালী করে রেখেছেন সেই নেতাদের মিথ্যা অভিযোগে দলীয় পদ স্থগিত করা মানতে পারছে না সাধারণ কর্মীরা।

তাদের দাবী আসন্ন সংসদ নির্বাচনের আগে অতি দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে স্থগিতাদেশ প্রত্যহার করে এসব নেতাদের পদে ফরিয়ে আনা হোক। একই সাথে মিথ্যা অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হোক। না হলে সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। ৭ নেতার দলীয় পদ স্থগিত হওয়া এবং দলে ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে কথা হলে শনিবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান,একটি গ্রুপের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক ভাবে আমরা তাদের দলীয় পদ স্থগিত করেছি। এবং খোঁজ খবর নিয়েছি।

তবে ইতোমধ্যে অনেক এলাকার নেতাদের স্থগিতাদেশ প্রত্যহার করা হয়েছে।  সংসদ নির্বাচনের আগে নিজ দলের প্রার্থীকে জেতানো এবং দলকে শক্তিশালী করতে তাদের স্থগিতাদেশ প্রত্যহার করা হবে কিনা প্রশ্নের উত্তরে তিনি উল্লেখ করেন,আমি একা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের অবগত করা হবে। অনুমতি পেলেই কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হবে। এবং আমাদের দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ করা হবে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়