তাড়াশের সুস্বাদু খেজুর গুড়, এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে


তাড়াশ( সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় শীত শুরু হয়েছে। আর শীতের শুরুতেই খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। ইতিমধ্যে গাছ ঝোঁড়া, পরিস্কার ও নল লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীর কাজ। রস সংগ্রহ করে তৈরী হচ্ছে ঝোলা ও পাটালি জাতের গুড়। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে যেমন রস সংগ্রহ বেশি হবে তেমনি গুড়ের উৎপাদনও বাড়বে আবার গুড়ের মানও বৃদ্ধি পাবে। তাড়াশে তৈরী সুস্বাদু এই খেজুর গুড় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে দেশের নানা স্থানে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ গাছ থেকে প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার ৫০০ মে.টন রস সংগ্রহ হয়ে থাকে। আর ওই রস থেকে তৈরি হয় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মে.টন সুস্বাদু খেজুর গুড়। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায়, বসতবাড়ি, পুকুর পাড়ে ও পরিত্যাক্ত ভিটে-ভাটিতে বেড়ে ওঠা ছোট-বড় খেজুর গাছ গুলোর ডাল পালা পরিস্কার ও নল (চুঙ্গি) লাগানোর পর শুরু হয়েছে রস সংগ্রহ। আর রস থেকে তৈরী করছেন ঝোলা, বাটি ও পাটালি গুড়। এলাকার গাছিয়ারা ছাড়াও রাজশাহী জেলার বাঘা ও চারঘাট, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি গাছিয়ার দল তাড়াশে এসেছেন খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করার জন্য। এই মৌসুমের জন্য এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে প্রকার ভেদে গাছ প্রতি ৩ থেকে ৪ কেজি গুড়ের বিনিময়ে খেজুর গাছ গুলো লীজ নেন। বিকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি গাছ গুলো এক বিশেষ কায়দায় কেটে তাতে হাঁড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়। ভোর রাত থেকে শুরু হয় রস সংগ্রহ তার পর বড় কড়াইয়ে করে আগুনে তাপ দেয়া হয়। পাতলা রস গাড় হলে তা বাটখাড়ায় ঢেলে তৈরী করা হয় খুড়ি গুড়, পাটালী গুড় ও ঝোলা গুড়।রাজশাহীর চারঘাট থেকে আসা গাছি সবুজ হোসেন (৩৬) বলেন, প্রতি বছরই শীতের আড়াই থেকে তিন মাস এ এলাকায় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করি। এ অঞ্চলে যেমন খেজুর গাছের সংখ্যা বেশী তেমনি খেজুর গুড়ের চাহিদাও বেশী। তাইতো প্রতি বছরই এখানে আসি। প্রতি কেজি খেজুর গুড় পাইকারদের কাছে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরো নিলে আর একটু বেশী পরবে। তাড়াশ উপজেলার রানীদিঘী গ্রামের গাছি ইয়াসিন বলেন, শীত শুরু হয়েছে তাই গুড় তৈরীও শুরু হয়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে রসের পরিমানও বাড়বে, আবার গুড়ের মানও আরও ভালো হবে।আমার এখানে সাধারণও ঝোলা গুড় তৈরী হয়। তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শীত মৌসুমে এ উপজেলায় খেজুরের রস থেকে প্রচুর গুড় তৈরী হয়। গুড় তৈরীর স্থান গুলো সার্বক্ষনিক কৃষি অধিদপ্তরের অধিনে মনিটরিং করা হয়। তাই তাড়াশের তৈরী সুস্বাদু খেজুর গুড়ের কদর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।