শুক্রবার, ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নুরজাহান হত্যা মামলার জট খুলল পুলিশের হাতে: নাগরপুরে মাস্টারমাইন্ডসহ গ্রেফতার ২

মনিরুল ইসলাম, নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের নাগরপুরে স্বামী-সন্তানহীন এক বৃদ্ধা নুরজাহান বেগম (৬৫) কে নির্মমভাবে হত্যার প্রায় দুই মাস পর সেই ‘ক্লুলেস’ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সম্পত্তি দখলের লোভ থেকেই পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামলার মূল পরিকল্পনাকারী (মাস্টারমাইন্ড) ও কিলিং মিশনের এক সদস্যসহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত নুরজাহান বেগম উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের খামার ধল্লা গ্রামের বাসিন্দা। নিঃসন্তান এই বৃদ্ধা একাকী জীবনযাপন করতেন। তার ভাতিজা বাদী হয়ে গত ১৩ মার্চ নাগরপুর থানায় একটি অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্তে বেরিয়ে আসে, পার্শ্ববর্তী বাঘের বাড়ি গ্রামের দুদু মিয়া ওরফে দুদু মেম্বারের ছেলে তোফায়েল হোসেন ওরফে তোফা মেম্বার (৪২) দীর্ঘদিন ধরে নুরজাহান বেগমের জমিজমা ভোগদখলের চেষ্টা করে আসছিলেন। নানা কৌশল ও চাপ প্রয়োগ করেও জমি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।

গত ১২ মার্চ সকাল ১০টার দিকে নুরজাহান বেগম একটি প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে মাঠে পড়ে থাকা গম, ভুট্টা ও পায়রার শিষ কুড়াতে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি বাড়ি না ফেরায় তার স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় রতনের তামাক ক্ষেতে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পান। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ প্রথমে মো. কালাম মিয়া (৩৮) নামের এক আসামিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গত ৫ মে গ্রেফতার করে। তিনি ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার ফকির কান্দি গ্রামের মৃত আপতাব মোল্লা ওরফে নাক কাটার ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে কালাম হত্যার সাথে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ভাড়া বাসা থেকে নিহতের রুপার বালা উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মূল পরিকল্পনাকারী তোফা মেম্বারকে ৬ মে রাতে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন।

নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এই হত্যাকাণ্ডটি ছিল একেবারেই ক্লুলেস। কিন্তু আমরা ধাপে ধাপে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে হত্যার মোটিভ, পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। মামলার অন্যতম আসামি কালাম মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আর তোফা মেম্বারকে রিমান্ডে এনে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই মামলার সকল দোষীকে আইনের আওতায় আনতে পারবো।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়