মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

তাড়াশে কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নারীরা

খালিদ হাসান, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: শীতের আগমনী হাওয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় আবারও জমে উঠেছে কুমড়ো বড়ি তৈরির কর্মযজ্ঞ। শীতকালেই সবচেয়ে বেশি কদর থাকে এই সুস্বাদু কুমড়ো বড়ির, তাই মৌসুম শুরু হতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগর ও ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় এই খাবারের চাহিদা এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

প্রতি বছরের মতো এবারও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চলছে কুমড়ো বড়ি তৈরির কর্মব্যস্ততা। ব্যবসায়ীরা জানান, আগাম উৎপাদন ও বিক্রির মাধ্যমে লাভের সম্ভাবনাও থাকে বেশি। সরজমিনে নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়—সারি সারি কুমড়ো বড়ি রোদে শুকানো হচ্ছে। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও সমান তালে কাজ করছেন।

স্থানীয় কুমড়ো বড়ি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, “হাট-বাজারে বর্তমানে কুমড়ো বড়ি খুচরা ৭০–৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে দাম আরও বাড়বে বলে আশা করছি।” তাড়াশের আরেক ব্যবসায়ী প্রদীপ কর্মকার জানান, “অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় এখানকার কুমড়ো বড়ির চাহিদা শুধু স্থানীয়ভাবে নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় চাহিদা সবচেয়ে বেশি।” তিনি আরও বলেন, “কুমড়ো বড়ি সারা বছর তৈরি করা সম্ভব। তবে শীতকালে এর স্বাদ বাড়ে, তাই এ সময় বেশি উৎপাদন করা হয়।

” জানা যায়, নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামে প্রায় ৩০–৪০টি পরিবার বহু বছর ধরে কুমড়ো বড়ি উৎপাদনে যুক্ত। এই কাজ স্থানীয় অনেক পিছিয়ে পড়া পরিবারের আয়-রোজগারের বড় সুযোগ তৈরি করেছে। ভাংশিং পাড়ার কারিগর আব্দুল হামিদ বলেন, “কখনো কুমড়ো বড়ি ব্যবসায়ী পরিবারগুলো খুব একটা সচ্ছল ছিল না। এখন অনেকেই ভালোভাবে চলছেন। আগে সনাতন পদ্ধতিতে সন্ধ্যায় ডাল ভিজিয়ে রেখে পরদিন রং, তেল ও শীলপাটা ব্যবহার করে বড়ি বানাতে হতো। এখন মেশিন ব্যবহারের কারণে সেই কষ্ট অনেকটাই কমে গেছে।

ডাল ফিনিশিং এখন মেশিনেই করা হয়।” নওগাঁ গ্রামের আরেক কারিগর সোনাভান খাতুন বলেন, “আগে কুমড়ো বড়ি তৈরিতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হতো। এখন অটোমেশিনে ডাল ও চাল ভাঙানো হয়, মেশিনে ডাল ফিনিশও করা যায়।

তাই আগের মতো কষ্ট নেই, শুধু হাতে বড়ি তৈরি করে দিতে হয়।” তাড়াশের ঐতিহ্যবাহী কুমড়ো বড়ি এখন অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আরও সহজ ও লাভজনক হয়ে উঠেছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়