শ্রীবরদীতে বন্য হাতির ভয়াল থাবা—বন বিভাগের দায়িত্বহীনতায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা
মোঃ শাকিল মিয়া, শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় ঘেঁষা এলাকায় দিন দিন বেড়ে চলছে বন্য হাতির তাণ্ডব। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাতি ও মানুষের সংঘাত কমাতে বন বিভাগ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের মালাকোচা, হাতিবর, সিংগিজানি, সোনাঝড়ি ও ঝুলগাওসহ কয়েকটি গ্রামে প্রায় প্রতিদিনই বন্য হাতীর পাল নামে ফসলি জমিতে। ১৫ থেকে ২০টি হাতীর দল ধান, আখসহ নানা ফসল খেয়ে ও নষ্ট করে দেয়। কখনও কখনও ঘরবাড়িও ভেঙে ফেলে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফিরু মিয়া বলেন, “এই সপ্তাহেই তিনবার হাতী আমাদের জমিতে নেমে ধান খেয়ে ফেলেছে। প্রায় ৬০ শতক জমির ফসল শেষ। বন বিভাগে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা পাইনি।” একই গ্রামের কৃষক রুমান জানান, “আমরা নিজেরাই ড্রাম বাজিয়ে আর মশাল জ্বালিয়ে হাতী তাড়াই। বন বিভাগের লোকজন শুধু দূর থেকে দেখে।”
স্থানীয় রাকিব বলেন, “বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালালে হাতি তাণ্ডব কম হয়, কিন্তু বন বিভাগ বাতি জ্বালানো নিষেধ করেছে। এতে আমরা ঝুঁকি নিয়ে অন্ধকারে হাতি তাড়াতে বাধ্য হচ্ছি।”
মালাকোচা এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি জানান, আগে বন বিভাগ থেকে কেরোসিনসহ কিছু সহযোগিতা পাওয়া যেত, কিন্তু এবার কিছুই পাওয়া যায়নি।
রানীশিমুল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া বলেন, “বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। বহুবার বন বিভাগকে জানালেও তারা শুধু আশ্বাস দেয়, স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয় না।”
বালিজুড়ি বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানান, “হাতীগুলো সীমান্তের ওপার থেকে আসে। আমরা স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছি এবং ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করে ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব পাঠাচ্ছি।”
তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধু পরামর্শ নয়— স্থায়ী বেড়া, আলোকসজ্জা ও হাতী প্রতিরোধ কমিটি গঠনসহ কার্যকর পদক্ষেপ নিলেই এই সংকট থেকে মুক্তি সম্ভব।


সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।