তাড়াশের নাদোসৈয়দপুরে রসুনের হাট কৃষি বাণিজ্যের নতুন প্রাণকেন্দ্র
খালিদ হাসান, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন বসে জমজমাট রসুনের হাট। ভোরবেলা থেকেই আশেপাশের গ্রামের কৃষক ও ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে হাট চত্বর। প্রতি রবিবার ও বুধবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত চলে এ হাট, যা এখন স্থানীয় কৃষকদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এই হাটে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫-২০টি গ্রামের কৃষকরা রসুন বিক্রি করতে আসেন। হাট বসার সময় গ্রামজুড়ে লেগে থাকে কোলাহল, যা শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়, সামাজিক মিলনমেলাতেও পরিণত হয়। তার মতে, এই হাট স্থানীয় অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখছে। হাটে আসা এক রসুন বিক্রেতা বলেন,আমরা নিজের জমিতে উৎপাদিত রসুন এখানে এনে বিক্রি করি। স্থানীয় হাটে বিক্রি করলে পরিবহন খরচ বাঁচে, আবার দামও মোটামুটি ভালো পাওয়া যায়।
এখন প্রতি মণ রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। অন্যদিকে, এক পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, আমরা এই হাট থেকে বড় পরিমাণে রসুন কিনে সিরাজগঞ্জ, নাটোর, এমনকি রাজশাহী পর্যন্ত পাঠাই। নাদোসৈয়দপুরের রসুন মানসম্মত ও ঘ্রাণে তীব্র হওয়ায় বাজারে এর আলাদা চাহিদা রয়েছে। রবিবার ও বুধবার ভোরে শুরু হওয়া এই রসুনের হাট এখন তাড়াশের কৃষকদের জন্য একটি আশীর্বাদস্বরূপ বাজার হিসেবে গড়ে উঠেছে। এতে একদিকে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন, অন্যদিকে এলাকার অর্থনীতি ও বাজার ব্যবস্থায় এসেছে নতুন প্রাণ।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্তা বলেন, নাদোসৈয়দপুরের মাটি ও আবহাওয়া রসুন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। স্থানীয় কৃষকরা এখন রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ হাটের মাধ্যমে কৃষকরা সরাসরি ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ পাচ্ছেন, যা টেকসই কৃষি অর্থনীতি গড়ে তুলতে সাহায্য করছে। তাড়াশের নাদোসৈয়দপুর রসুনের হাট এখন শুধু একটি স্থানীয় বাজার নয়—এটি হয়ে উঠেছে চলনবিল অঞ্চলের কৃষি বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র।


সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।