সোমবার, ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

জিম্মি করে টাকা আদায়ে মরিয়া বিএমডিএ-এর ২ কর্মকর্তা

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)- এর দুই কর্মকর্তা কৃষকদের জিম্মি করে টাকা আদায় মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিএমডিএ -এর নওগাঁ রিজিয়ন-২ (পত্নীতলা) নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে গণকূপ পূন:খননে হয়রানি ও খাদ্য সংকটে শতাধিক পরিবারকে জিমি করেছে বলে অভিযোগ দিয়েছেন কৃষকেরা। শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষর নিয়ে অভিযোগ করেছেন সাপাহারের রায়পুর গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে মো. নুরুনবী, তিনি কৃষকের পক্ষে জে এল নম্বর ৫৫, দাগ নম্বর ৬৫৭, মোজা- রায়পুর, সাপাহার, নওগাঁ- এ স্থাপিত গণকূপের জন্য পার্টিসিপেশন ফি ১ লাখ টাকা জমাদান দিয়েছেন।

তিনি জানান, এই গণকূপের আওতায় ১০০ জন কৃষকের ধানসহ বিভিন্ন ফসলের প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে। গণকূপটি ৭ মাস আগে বালু ও পাথর উঠে আসায় পানির পরিমাণ খুব কমে যায়। এই বিষয়টি বিএমডিএ-এর সাপাহার অফিস প্রধান, সহকারী প্রকৌশলী মো তরিকুল ইসলাম ও পরিদর্শক আব্দুর রবকে জানায়। এরপর অনেক হয়রানি করে টেস্ট বোরিং (বালু টেস্ট) করার মৌখিক অনুমতি দেন তারা। ১৪/০১/২৫ তারিখে বালু জমা দেয় তাদের কাছে। তারা সরেজমিনেও পরিদর্শন করেন। ২২/০১/২৫ তারিখে বালু টেস্ট রিপোর্ট এ স্বাক্ষর করেন তারাসহ আরো ৫ জন। এরপর আবারও তারা হয়রানি শুরু করেন। ৪০ হাজার ঘুষের টাকা দাবি করেন তারা দুই জন।

মো. আনিকুল ইসলাম (৪৮) বলেন, অনেক হয়রানির পর পার্টিসিপেশন ফি টাকা নেন। ঘুষের টাকা দিতে না পারায় গণকুপটি পূন:খনন না করে উল্টো হয়রানি করে চলেছেন। পরিদর্শক আব্দুর রব বিভিন্ন টালবাহানা করছে। আমাদেরকে আব্দুর রব বলেন, আমার বাড়ি নাচোল বেশি চেষ্টা করছেন, জানতে পারলে চীরদিনের মতো ডীপ করা বন্ধ করে দিবো। নাহলে আমার মনোনীত লোকের সাথে সমঝোতা করে আসেন।৷ তাছাড়া অফিসে আসলে কপালে বিপদ আছে, এসব বলে হুমকি দেন তিনি। আপনাদের ডীপ বন্ধ থাকলে আমার কোনো ক্ষতি নেই। বরং ডীপ হলে ঝামেলা বাড়বে। তার হুমকী ও হয়রানির জন্য এই গণকূপের আওতাধীন কৃষকদের প্রায় ২০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। এতে করে চরম খাদ্য সংকটে রয়েছেন এই স্কিমের গরিব কৃষকেরা।

মো. এরফান আলি (৫৩) বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা ইসমাইল হোসেনকে কথামত দল গঠনের মাধ্যমে ডীপ (গভীরনলকূপটি) বন্ধ রেখে আমাদের জিম্মি করছে এই দুই কর্মকর্তা। তারা অপেক্ষায় থাকে কৃষক গেলেই বিপদে ফেলে টাকা আদায়ের জন্য। এই আওয়ামী লীগের দোসরদের সঠিক বিচার চাইছি। বিএমডিএ-এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী স্বাধন চন্দ্র মজুমদার আব্দুর রবকে সাপাহারে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য একাধিকবার ফোন দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর থেকে তাকে সেখানেই পরিদর্শক হিসাবে রাখা হয়েছে। সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম ছুটিতে রয়েছেন।

অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে কথা বলতে চাননি। আব্দুর বর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়