নওগাঁয় প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবিতে নেসকো অফিস ঘেরাও
নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় বিদ্যুতের হয়রানিমূলক প্রি-পেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবিতে নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে গ্রাহকেরা। এ সময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোসহ নিরাপত্তার স্বার্থে নেসকো অফিসের প্রধান ফটক বন্ধ করে রাখে কর্তৃপক্ষ।
আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে তাজের মোড়ে শহীদ মিনারে বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা কমিটির ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা শহরের কাঠালতলী এলাকায় নেসকোর বিদ্যুৎ ও বিতরণ বিভাগ নওগাঁ কার্যালয় ঘেরাও করেন। ঘেরাও কর্মসূচি শেষে নেসকোর বিদ্যুৎ ও বিতরণ বিভাগের প্রি-পেইড মিটার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হাসিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থরক্ষা কমিটির নেতা ও নওগাঁ পৌর এলাকার বিদ্যুতের সাধারণ গ্রাহকেরা রোববার সকাল ১০টার দিকে শহরের তাজের মোড়ে জড়ো হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তাঁরা শহরের কাঠালতলী মোড় এলাকায় অবস্থিত নেসকোর অফিসের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। এ সময় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বেশ কিছু সংখ্যক সেনা সদস্য ও পুলিশ সদস্য সেখানে মোতায়েন ছিলেন।
সমাবেশে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নওগাঁ জেলা শাখার আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন মুকুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাত থেকে রেন্টাল, কুইক রেন্টালের নামে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের লুটেরা বাহিনী কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে আমরা এই লুটেরাদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি বিদ্যুৎ এখনো হয়রানি ও ভোগান্তিতে ফেলানোর প্রক্রিয়া চলে আসছে।’
বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মাসুদুল আলম সাজু বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে নেসকো নওগাঁ শহরে প্রিপেইড মিটার স্থাপনা শুরু করলে বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা প্রতিবাদ করলে সেই মিটার স্থাপন বন্ধ হয়ে যায়। গ্রাহকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গণশুনানী করে মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা নেসকোর। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি তাঁরা সেটা না করে আবারও শহরে প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম চালু করেছে। গ্রাহককে নানা প্রকার হুমকি-ধামকি দিয়ে প্রেপেইড স্থাপন করা হচ্ছে। এটা অগ্রহণযোগ্য। গণশুনানি ছাড়া প্রেপেইড মিটার স্থাপন করতে দেওয়া হবে না।’
বিদ্যুৎ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব আলিমুর রেজা রানা বলেন, ‘প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ করে পুরনো মিটারের ত্রুটি সংশোধন করতে হবে। এর মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি ও আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। ইতোমধ্যে যাঁদের বাড়িতে প্রিপেইড মিটার লাগানো হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করা না হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’
এ বিষয়ে নেসকোর প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হাসিবুর রহমান বলেন, ‘প্রিপেইড মিটার লাগানো নেসকোর একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। প্রিপেইড মিটার সম্পর্কে মানুষের কিছু ভুল ধারণা আছে। আবার কারও কারও মাঝে অজ্ঞতাও কাজ করছে।
আমরা গ্রাহকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাঁদেরকে প্রিপেইড মিটার সম্পর্কে বুঝাচ্ছি। যে সমস্ত গ্রাহক প্রেপেইড মিটার স্থাপন করতে চাইছে, আমরা তাঁদের সংযোগেই প্রিপেইড মিটার স্থাপন করছি। কোনো গ্রাহককে জোর করে কিংবা হুমকি-ধামকি দিয়ে মিটার স্থাপন করা হচ্ছে না। আজকে যে অভিযোগ করা হলো এটা আমরা আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’


সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।