বুধবার, ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভারত আমার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে: সজিব ওয়াজেদ জয়

সংবাদের আলো ডেস্ক: মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এর তীব্র সমালোচনা করেছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন জয়। বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘ভারত আমার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে। সম্প্রতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নেওয়া আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি খারিজ করে দিয়েছেন জয়। একই সঙ্গে সীমান্তের ওপার থেকে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের হুমকি সম্পর্কে নয়াদিল্লিকে সতর্ক করেছেন। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জয়। তার দাবি, জঙ্গিরা তাকে (শেখ হাসিনা) হত্যার পরিকল্পনা করছে।

এ সময় হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রত্যর্পণের অনুরোধের বৈধতা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন জয়। একই সঙ্গে তার মায়ের বিরুদ্ধে মামলায় বিচারিক রীতিনীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন তিনি।সাক্ষাৎকারে জয় বলেছেন, ‘তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) বিচারের আগেই ১৭ জন বিচারককে বরখাস্ত করেছে, সংসদীয় অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে আইন সংশোধন করেছে এবং তার (শেখ হাসিনা) আইনজীবীদের আদালতের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছে। যখন কোনো যথাযথ প্রক্রিয়া থাকে না, তখন কোনো দেশই প্রত্যর্পণ করবে না।

জয় আত্মবিশ্বাসী যে, বাংলাদেশে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অভাবের বিষয়টির উল্লেখ করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করবে।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে, বিশেষ করে তার ১৫ বছরের শাসনামলে। তবে জয় জোর দিয়ে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আপস করেছে।শেখ হাসিনার নাটকীয় পলায়নের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জয় তার মায়ের জীবন বাঁচানোর জন্য ভারতকে কৃতিত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘ভারত মূলত আমার মায়ের জীবন বাঁচিয়েছে। যদি তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে না যেতেন, তাহলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের।’জয়ের দাবি, শেখ হাসিনার আমলে দোষী সাব্যস্ত ‘হাজার হাজার সন্ত্রাসী’ কে মুক্তি দিয়েছে অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকার। এছাড়া লস্কর-ই-তৈয়বা এখন বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে কাজ করছে, যাদের স্থানীয় শাখার সঙ্গে দিল্লিতে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার যোগসূত্র রয়েছে।

জয় বলেন, ‘আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী মোদি সম্ভবত বাংলাদেশের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে খুব, খুব উদ্বিগ্ন।’

সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান টানাপোড়েনের সম্পর্কের মধ্যে এই অভিযোগগুলো সামনে এলো।এছাড়া গত বছরের বিক্ষোভে অনুপ্রবেশকারী জঙ্গিদের অস্ত্র সরবরাহের জন্য পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে দায় দেন জয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সশস্ত্র ব্যক্তিদের ভিডিওর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে, এই অস্ত্রগুলো উপমহাদেশের কোথাও থেকে সরবরাহ করা হয়েছিল এবং একমাত্র সম্ভাব্য উৎস হলো আইএসআই।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেন, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তন করতে বাইডেন প্রশাসন ইউএসএইডের মাধ্যমে লাখ লাখ ডলার ব্যয় করে। ওই মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে জয় অভিযোগ করেন, ট্রাম্প প্রশাসন তার পূর্বসূরির তুলনায় ‘সন্ত্রাসবাদের হুমকি এবং বাংলাদেশে ইসলামবাদের উত্থান সম্পর্কে বেশি উদ্বিগ্ন’ বলে মনে হয়েছিল। যদিও বর্তমান মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানান জয়।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়