আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সফলতার নতুন দিগন্ত খুলেছে পূর্বধলার নিলয়
আব্দুল্লাহ আল মামুন, পর্বধলা (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি: জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করে কৃষিতে টিকে থাকা যখন বড় চ্যালেঞ্জ, তখন আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সফলতার নতুন দিগন্ত খুলেছেন ২২ বছরের এক যুবক। পলিনেট হাউজ প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা বছর উচ্চমূল্যের ফসল ফলিয়ে তিনি শুধু নিজের ভাগ্যই বদলাননি, এলাকার অন্যান্য কৃষকদের কাছেও হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণা।
বলছি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সিজকান্দী গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে নিলয়ের কথা।২০১৮ সালে এইচএসসি শেষ করার পর এখন কৃষি ডিপ্লোমায় পড়াশোনা করছেন সে। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়েছেন চ্যালেঞ্জিং এক পেশা। আধুনিক কৃষির মাধ্যমে টাটকা-সতেজ শাকসবজি উৎপাদন ও বাজারজাত করাই তার লক্ষ্য। বর্তমানে তার এখানে আরো দুজনের কর্মসংস্থান হয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সে বছরে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা আয় করছেন।
চিরাচরিত পদ্ধতিতে ফসল ফলিয়ে আবহাওয়ার প্রতিকূলতা, পোকামাকড়ের আক্রমণ আর ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে উপজেলা কৃষি অফিসের শরণাপন্ন হয় নিলয়। পরে, গত ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় তার বাড়ির সামনে ১০ শতাংশ জমিতে ‘পলিনেট হাউজ’ তৈরি করে দেওয়া হয়। এতে সে বিভিন্ন ফলজ ও সবজি চারা উৎপাদন এবং শাকসবজি চাষ শুরু করেন ।
নিলয় বলেন, পলিনেট হাউজে আমি চারা উৎপাদনের পাশাপাশি সবজি চাষ করতেছি। আমি কৃষি কাজের সাথে ২০১৫ সাল থেকে যুক্ত। এ লম্বা সময়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি এবং তা কাজে লাগিয়ে উন্নত মানের চারা উৎপাদন এবং বিক্রি করছি। যেহেতু সরকার আমাদের এখানে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ইনভেস্ট করেছে তাই আমরা স্বল্প লাভে চারা বিক্রি করে থাকি। যেন কৃষিতে আরো নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হতে পারে । আমার পাশাপাশি এখানে আরো দুজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুর্শিদা আক্তার বলেন, সাজ্জাদুল নূর নিলয় একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার পলিনেট হাউজ বছর ব্যাপী বিভিন্ন প্রজাতির চারা উৎপাদন করা হয়। তার থেকে চারা নিয়ে এলাকার অনেকেই নতুন উদ্যোক্তা হচ্ছেন। আমি নিয়মিত এখানে আসি এবং প্রয়োজন মাফিক পরামর্শ দিয়ে থাকি।
পূর্বধলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জোবায়ের হোসেন বলেন, সীজকান্দি গ্রামের নিলয়কে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় পূর্বধলা কৃষি অফিস থেকে পলিনেট হাউজ দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে কৃষকদের চাহিদা মাফিক চারা ও সবজি উৎপাদন করে সুলভ মূল্যে বিক্রি করতে বলা হয়েছে। যাতে করে পূর্বধলায় নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও নিলয় পলিনেট হাউজের পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ থেকে শুরু করে পরিবেশ বান্ধব পুষ্টি বাগান করে সাড়া ফেলেছেন।


সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।