শুক্রবার, ১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দুই উপদেষ্টার বক্তব্যের বিরুদ্ধে বান্দরবানে সংবাদ সম্মেলন

আব্দুল আওয়াল আলিফ, বান্দরবান প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী’র সাম্প্রতিক বক্তব্য ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) এবং তাদের সহযোগী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।

রোববার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় বান্দরবান সদরের ইসলামপুর এলাকায় পিসিএনপির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপি বান্দরবান জেলার সভাপতি আসিফ ইকবাল, এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিসিএনপির চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পিসিসিপি সভাপতি আসিফ ইকবাল। তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৩ জুন অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় “ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন ২০১০ সংশোধন করে “জাতি বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়। এতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ছাড়াও, প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে ৬ জন সদস্যের সবাইকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীভুক্ত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়—যা সংবিধান পরিপন্থি ও একপাক্ষিক বলে মন্তব্য করে সংগঠনটি।

এছাড়া, সভায় উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর বক্তব্যের সূত্র ধরে সংগঠনটি দাবি করে, এসব সিদ্ধান্ত দেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের ‘একক জাতিসত্তা’ ধারণার পরিপন্থী। তারা বলেন, এই সিদ্ধান্তে বাঙালি জনগোষ্ঠীকে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রদীপ চাকমার একটি বক্তব্যও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। যেখানে তিনি বলেছিলেন, “আমরা আদিবাসী শব্দটি চাই শুধুমাত্র আমাদের আইডেন্টিটির জন্য… বাঙালিরা না থাকলে আমাদের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সংগঠনটি দাবি করে, এই বক্তব্য সংবিধানবিরোধী ও রাষ্ট্রের জাতি-পরিচয় নীতির পরিপন্থী।

পিসিসিপি সভাপতি বলেন, ৭(ঘ) ধারা সংশোধনের মাধ্যমে শুধু এক পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হলে পার্বত্য অঞ্চলে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হবে, যা বাঙালিদের জন্য বৈষম্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি করবে। পিসিএনপি অভিযোগ করে, সুপ্রদীপ চাকমা অতীতে বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দে অনিয়ম এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বিতর্কিত হয়েছেন। ভবিষ্যতে তিনি যেন রাষ্ট্রবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত না নেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনটি ঘোষণা দেয়, দেশ ও সংবিধানবিরোধী কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা হলে ছাত্র ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান প্রেসক্লাব সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এইচ এম সম্রাট, পিসিএনপি নেতা মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. আলম, আব্দুস শুক্কুর, রুহুল আমিন, আব্দুল আলীম মনু, শাহ জালাল, আফসার, কামাল হোসেনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়