বারহাট্টায় ১১ বছর পর ২৫ মে হচ্ছে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন


বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: দীর্ঘ ১১ বছর পর ২৫ মে রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলন পরবর্তী একই সঙ্গে কাউন্সিলও অনুষ্ঠিত হবে।সম্মেলনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ ও উৎসবের আমেজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,সর্বশেষ ২০১৪ সালে বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সেই কমিটির মেয়াদ চলে গেলে ২০১৯ সালে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়।২০১৯ থেকে আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলছে উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম।২০২২ সালে বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ।কিন্তুু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে তৎক্ষালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মাইনুল হক কাশেম ও সাহতা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চঞ্চলের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতা কর্মী বিএনপির সম্মেলন মঞ্চে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে বারহাট্টা কারিগরী ও বাণিজ্যক কলেজের মাঠে সম্মেলন দেওয়ার চেষ্টা করা হলে একই দিনে একই স্থানে যুবলীগের পোগ্রাম দেওয়া হয়।তাই বাধ্য হয়ে উপজেলা বিএনপি সম্মেলন স্থগিত করা হয়।
বারহাট্টা উপজেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের ৪৯৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সভাপতি পদে ৪ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ জন হেভিওয়েট প্রার্থীর নাম শুনা যাচ্ছে।
নির্বাচনে সভাপতি পদের জন্য লড়বেন বর্তমান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাক আহমেদ। এ পদের জন্য অন্যরা হলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মানিক আজাদ,সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদার,বাউসি ইউনিয়নের তিনবারের সফল সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রশীদ আলম তালুকদার।
সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন বর্তমান উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিক আহম্মেদ কমল,উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আক্কাস আলী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল্লাহ সোহেল।
নির্বাচনে কয়েকজন ভোটার দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, ‘আমরা সৎ, আদর্শবান ও ত্যাগী নেতাদেরই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করতে চাই। যারা তৃণমূলের সাধারণ নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকবেন সব সময়।
সভাপতি প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মানিক আজাদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে হলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। তাই আমরা স্বাধীনভাবে দলের সম্মেলন করতে পারছি। বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে বারহাট্টা উপজেলা জুড়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। আশা করি, নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দল আরও সুসংগঠিত হবে ও শক্তিশালী হবে।’ সভাপতি পদে জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
সভাপতি প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদার জানান আমি বিএনপির দুর্দিনে সভাপতি ছিলাম এবং কর্মীদের আগলে রেখেছিলাম। এখনও আমি তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে আছি।আমি সকল কাউন্সিলারদের কাছে যাচ্ছি আশা করি তারা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।
সভাপতি প্রার্থী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রশীদ আলম তালুকদার জানান আমার অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা বিএনপির সাত ইউনিয়নের কমিটি থেকে প্রশ্নবিদ্ধ কাউন্সিলর দের বাদ দিয়ে ত্যাগী ৪ জন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমি আশা করি তৃনমুল বিএনপির ত্যাগী কাউন্সিলররা আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। সভাপতি প্রার্থী বর্তমান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাক আহমেদ বলেন ২৫ মে আমাদের সম্মেলন।দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমরা এখানে এসেছি।আমি তৃণমূল বিএনপির সাথে সব সময় ছিলাম এখনও আছি।আশা করি তারা আমাকে ভোটে জয়যুক্ত করবে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিক আহমেদ কমল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার আমাদের মামলা-হামলা করে নানারকম অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আমাদের পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। তবুও আমি দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো। আমি আশা করি, দলীয় নেতাকর্মীরা ভোট দিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে আমাকে বিজয়ী করবেন।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।