চুরি করতে দেখে ফেলায় শিশুকে ভয়ভীতি, অতঃপর আতংকে অসুস্থ হয়ে শিশুর মৃত্যু


আগৈলঝাড়া, (বরিশাল) প্রতিনিধি: বরিশালের আগৈলঝাড়ায় চুরির সময় চোরদের দেখে ফেলায় হত্যার ভয় দেখানো হয় মাত্র সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে।
চোরদের দেখানো ভয়ের কথা মা বাবার কাছে বলেও দেয় সে। এতেই আতংকিত হয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যায় শিশুটি। পরিবারসহ স্থানীয়দের দাবী হত্যার ভয় দেখানোর কারনে আতংকিত হয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যায় ওই শিশু। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চোরদের বিচারের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। সংবাদ পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিশুটির মরদেহ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। জানাগেছে, উপজেলার বাকাল গ্রামের দিনমজুর নজরুল হাওলাদার ও মারুফা বেগম দম্পতির তিন সন্তানের সবচেয়ে ছোট সন্তান মুন্না। বয়স মাত্র সাড়ে তিন বছর।
সোমবার সন্ধ্যায় ছোট্ট শিশু মুন্নাকে ঘরে রেখে পুকুরের ঘাটে কাজ করতে যান মা মারুফা বেগম। ঘরে কেউ না থাকায় ঘরটিতে থাকা বিক্রির উদ্যোশ্যে রাখা মাছ চুরি করতে যায় একই গ্রামের কালু খাঁনের ছেলে মাদকসেবী শাহিন খাঁন ও কমল রায়ের ছেলে মাদকসেবী কল্যাণ রায়। চুরি করার সময় চোরদের ফেলায় হত্যার ভয় দেখানো ওই শিশুকে।
শিশুটির বাবা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন চুরির মাছ বিক্রির জন্য নেওয়া ভ্যান চালক একই গ্রামের রবিউল ফকিরের কথা। এসময় রবিউলের কাছে জানতে পেরে সনাক্ত করা হয় চোরদের। এরপর অভিযুক্ত চোরদের সাথে নিয়ে স্থানীয় এক মাদক কারবারীর বাড়ি থেকে সোমবার রাতেই উদ্ধার করা হয় চুরি যাওয়া মাছ।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়, পরদিন মঙ্গলবার ভোড়ে চোরদের হত্যার ভয় দেখানোর কারণে আরো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরে শিশুটি। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করেন চিকিৎসক। কিন্তু গোপালগঞ্জের একটি হাসপাতালে শিশুটির আত্মীয় থাকায় চিকিৎসার জন্য সেখানে নিয়ে যায় শিশুটির স্বজনেরা। সেখানে বসে শিশুটির অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় শিশু মুন্নাকে নিয়ে আবারো বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে রওনা হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে পথেই মারা যায় শিশুটি।
পরিবারসহ স্থানীয়দের দাবী হত্যার ভয় দেখানোর জন্যই আতংকিত হয়ে অসুস্থ্য হয়ে মারা যায় শিশু। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত শিশুটিকে দেখতে গিয়ে অভিযুক্ত চোরদের বিচারের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।
সংবাদ পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিশুটির মরদেহ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। শিশুটির মা মারুফা বেগম ও বাবা নজরুল হাওলাদার জানায়, চুরির সময় চোরদের দেখে ফেলায় হত্যার ভয় দেখানো হয় শিশু মুন্নাকে। চোরদের দেখানো ভয়ের কথা মা বাবার কাছে বলেও দেয় সে। এরপরেই অসুস্থ্য হয়ে মারা যায় শিশুটি। এলাকাবাসী জানায়, মাত্র সাড়ে তিন বছরের শিশুটিকে ভয় দেখানোর কারনেই আতংকিত হয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যায় শিশুটি। হৃদয় বিদারক এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবী জানিয়েছেন তারা।
আর অভিযোগের ভিত্তিত্বে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুশংকর মল্লিক।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।