শুক্রবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

খেলনা নিয়ে ঈদ করা হলোনা শিশু লামিয়ার, সেপটিক ট্যাংকে মিললো নিথর দেহ

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: গার্মেন্টস কর্মী মায়ের কাছে ঈদে খেলনার আবদার করেছিল ৬ বছরের ছোট্ট শিশু লামিয়া। খেলনা নিয়ে ঈদ করা হলোনা তার।

তার আগেই লামিয়ার নিথর দেহ নানার বাড়ির পাশে আ.লীগ নেত্রীর পরিত্যক্ত ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করলো পুলিশ।

ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন কিশোর শিশুটির চাচাতো ভাই জুবায়ের, খালাতো ভাই রিফাত ও মামা আরাফাতকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে হৃদয় বিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নের ছোট বিন্নাদাইর গ্রামে।

শিশু লামিয়া ওই গ্রামের আব্দুর রশিদের নাতনী ও উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের নাজিম প্রামাণিকের মেয়ে।

সে বিলকলমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলো। তাকে নানার বাড়ি রেখে তার বাবা মা গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গার্মেন্টসে চাকরি করেন। বুধবার (৪ জুন) সকালে সরেজমিনে শাহজাদপুর উপজেলার ছোট বাঘাবাড়ি (ছোট বিন্নাদাইর) গ্রামের গিয়ে শিশু লামিয়ার মা এবং স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠতে দেখা যায়।

এসময় লামিয়ার মা আর্তনাদ করে বলেন তার মেয়ে ঈদে খেলানা ও নতুন জামা চেয়েছিল। কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি আরও বলেন, “লামিয়া ও রোজা মনি (২) কে বাবার বাড়ি মায়ের কাছে রেখে গার্মেন্টসে চাকরি করি। গতকাল রাত ৮টায় বাড়ি থেকে মোবাইলে জানায় যে লামিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

পরে আমরা রাত আনুমানিক ১২ টায় বাড়িতে এসে দেখি পাশের আ.লীগ নেত্রী রুপা বেগমের পরিত্যক্ত বাড়িতে পুলিশ লামিয়াকে খুঁজছে। কিছুক্ষণ পরেই ওই বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে আমার মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়।” এই বিষয়ে শিশু লামিয়ার অপর নানা ইউনুস আলী জানান, “গতকাল আমরা বাড়ির সবাই জমিতে কাজ করছিলাম এসময় লামিয়া বাড়িতে একা ছিল।

সন্ধ্যায় আমরা বাড়ি ফিরে লামিয়াকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও পাইনি। পরে শাহজাদপুর থানায় নিখোঁজের জিডি করলে রাতে পুলিশ এসে খোঁজ খবর নেয়। পরে রাত আনুমানিক ২টায় বাড়ির পাশে অবস্থিত আ.লীগ নেত্রী রুপা বেগমের পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে শিশুটির পায়ের জুতা দেখে অনুসন্ধান চালিয়ে সেখান থেকেই শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

” শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো.;আসলাম আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ৬ বছর বয়সী শিশু লামিয়া নিখোঁজের খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল অনুসন্ধানের জন্য পাঠানো হয়। পরে তার নানার বাড়ির পাশে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর আলামত লুকিয়ে ফেলার জন্য শিশুটিকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এই বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়