বৃহস্পতিবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সুদানে ড্রোন হামলায় নিহত ম‌মিনুল ইসলা‌মের দাফন সম্পন্ন‌

খা‌লেক পার‌ভেজ লালু,উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে ড্রোন হামলায় নিহত কুড়িগ্রামের উলিপু‌রের সেনা সদস‌্য ম‌মিনুল ইসলা‌মকে সামরিক মর্যাদায় দাফন করা হ‌য়ে‌ছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে উলিপুর হেলিপ্যাডে তার মর‌দেহ আনা হয়।

পরে সেখান থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নিজ নিজ পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।লাশ বাড়িতে পৌঁছানোর পর প্রিয়জনকে হারিয়ে পরিবারের সদস‌্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আশপা‌শের গ্রামেও এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।স‌রেজ‌মিনে দেখা গে‌ছে, রোববার (২১ ডি‌সেম্বর) দুপুর ২টা ২০ উলিপুর হেলিপ্যাডে অবতরণ ক‌রে সেনাবা‌হিনীর লাশ বহনকারী হে‌লিকপ্টার।

প‌রে ২ টা ২৬ মি‌নি‌টে মর‌দেহ নিয়ে বাড়িতে রওনা হয়। ‌প‌রে বি‌কে‌লে চারটার দি‌কে শহীদ ম‌মিনুল ইসলাম‌কে সামরিক মর্যাদায় উত্তর পান্ডুল জামতলা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।এ সময় উপিস্থত ছি‌লেন, সেনাবাহিনীর কুড়িগ্রাম ক্যাম্পের মেজর মো. ইনজামামুল আলম, ক্যাপ্টেন রাফসান, চিলমারী ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন তাহসীন তামীম, তাসফিন উল হক, উলিপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম মেহেদী হাসান, উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাঈদ ইবনে সিদ্দিক সহ সেনাবাহিনীর সদস্যবৃন্দসহ স্বজনরা। এরআগে ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে সোয়া নয়টার দিকে মমিনুলসহ নিহত শান্তিরক্ষীদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।সৈনিক মো. মমিনুল ইসলামের বাড়ি উলিপুর উপজেলার উত্তর পান্ডুল গ্রামে। তিনি দুই কন্যাসন্তানের জনক। বড় মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে, ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ বছর।সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের স্থানীয় সময় দুপুর ৩টা ৪০ মিনিটে আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কাদুগলি লজিস্টিক বেসে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। নিহতদের মধ্যে কুড়িগ্রামের এই দুই সেনাসদস্য ছাড়াও নাটোর, রাজবাড়ী, কিশোরগঞ্জ ও গাইবান্ধার বাসিন্দা ছিলেন।পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম প্রায় ১৮ বছর আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। বিদেশ যাওয়ার আগে তিনি ছয় মাস প্রশিক্ষণ নেন। চলতি বছরের অক্টোবরে ছুটিতে বাড়িতে এসে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে যান।মমিনুল ইসলামের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘যাওয়ার সময় কইছিল, মা কান্না করো না, আমি তাড়াতাড়ি ফিরমু। এইভাবে ফিরবে জানলে বাপ ধনকে মুই (আমি) বিদেশ যাবার দিনু না হয়।’দূর দেশের মাটিতে বিশ্ব শান্তির দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মমিনুল ইসলামের এই মৃত্যু গভীর শোকের পাশাপাশি এক ধরনের নীরব গর্বের অনুভূতিও তৈরি করেছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়