শনিবার, ২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভূঞাপুরে গণকবর অরক্ষিত ও অবহেলিত খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা

আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় অরক্ষিত রয়েছে গণকবর এবং অবহেলিত রয়েছেন খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণ । ভূঞাপুরে অনেকগুলো গণ কবর রয়েছে অযতœ-অবহেলায়। বিজয় দিবসে কিছু পুষ্পার্ঘ দায় সারেন প্রশাসন। সারা বছর কেউ আর মনে রাখে না। ফলে স্বাধীনতা ও বিজয়ের ৫৫ বছরেও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি গণকবর গুলোর। ভূঞাপুরে ৪৭ জন শহীদের ১২ টি গণকবর থাকলেও তার একটিও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি।

১৯৭১ সালে ১৭ নভেম্বর ছাব্বিশা গ্রামে পাকসেনারা আক্রমণ করে পুরো গ্রামটি আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেয় এবং গণহত্যা চালায়। এ গ্রামে ৭ টি গণ কবরে ৩৮ জন শহীদ, ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২ টি গণ কবরে ৪ জন শহীদ ও ভূঞাপুর লৌহজং নদীর তীর সংলগ্ন বালু চরে ৩ টি গণ কবরে ৫ জন শহীদের তথ্য পাওয়া যায়। উপজেলার ভারই গ্রামের আব্দুল বারী মিয়া ও পূর্ব ভূঞাপুর গ্রামের ওস্তাদ ক্ষেত্র মোহন বসাক এ দু’জন বুদ্ধিজীবীসহ ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

এছাড়া ১৫ জন বীরঙ্গণার কেউই মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায় নাই বলে জানায় মুক্তিযুদ্ধের গবেষক মামুন তরফদার। এর মধ্যে ছাব্বিশা গ্রামের ৮ জন, বামনহাটা গ্রামের ৩ জন, পূর্ব ভূঞাপুর গ্রামের ৪ জন বীরঙ্গণা রয়েছে। তবে সনাতন ধর্মাবলম্বী কেউ কেউ গর্ভবতী অবস্থায় এবং বাচ্চা প্রসব করে লাজ-লজ্জার ভয়ে ভারতে চলে গেছেন। তাছাড়া ভূঞাপুরের প্রায় অর্ধশত লাঞ্চিত মা-বোনদের অনেকেই চক্ষুলজ্জার ভয়ে বিষয়টি প্রকাশ করেননি। টাঙ্গাইলের ‘মহাবীর’ খেতাব প্রাপ্ত ৩ জন বুদ্ধিজীবীর মধ্যে ২ জন ভূঞাপুরের।

একজন শহীদ আব্দুল কদ্দুস ও নজরুল ইসলাম বাকু মিয়া। টাঙ্গাইলে শহীদ সালাউদ্দিনের নামে ঘাটাইলে ‘শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাস’ নাম করণ করা হলেও ভূঞাপুরের ২ জন শহীদ আব্দুল কদ্দুস ও নজরুল ইসলাম বাকুর নামে কোনো প্রতিষ্ঠান,শহর, বাজার বা রাস্তার নাম করণ করা হয়নি। স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা পরিষদ বিভিন্ন সময়ে শহীদ আব্দুল কদ্দুস ও নজরুল ইসলাম বাকুর নামে সরকারি ভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান বা রাস্তার নাম করণের আবেদন করলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধে ভূঞাপুরে ৩ জন কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। খন্দকার হাবিবুর রহমান, আসাদুজ্জামান আরজু এবং অব্দুল কদ্দুস। এর মধ্যে আব্দুল কদ্দুস ৮ অক্টোবর সম্মুখ সমরে শহীদ হন। ভূঞাপুরের গণকবর গুলো সনাক্ত করে তা সংরক্ষণ এবং ‘মহাবীর’ খেতাব প্রাপ্তদের নামে প্রতিষ্ঠান বা রা¯তার নাম করণের দাবী দীর্ঘ দিনের।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়