সোমবার, ৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে বিশেষ অভিযান

আখতার হোসেন খান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে নেমেছে প্রশাসন। ভূঞাপুর উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব প্রায় ৫৯৫.৯১ শতাংশ জমির মধ্যে দখলে আছে মাত্র ৪ শত শতাংশের কিছু বেশি। বাকি প্রায় ১ শত ৯৫ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠি অবৈধভাবে  দখল করে রেখেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদ ১৯৮৪ সালে নির্মিত হয়। উপজেলার দুটি মৌজায় উপজেলা প্রশাসনের নিজস্ব জমি রয়েছে। তারমধ্যে ফসলান্দি মৌজাতে  ১৩ টি দাগে মোট ৪৩৮ শতাংশ এবং  ঘাটান্দি মৌজায় ১১ টি দাগে ১৫৭ শতাংশ জমি রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, দুটি মৌজার মোট ২৪ টি দাগে ৫৯৫.৯১ শতাংশ জায়গা  উপজেলা প্রশাসনের নামে মালিকানা সত্ব রয়েছে যা সরকারি স্বার্থ জিড়ত রয়েছে এবং এই জায়গাটির বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে যা বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের মালিকানার বাইরে কিছু অসাধু ব্যক্তির অবৈধ ও অন্যায়ভাবে ভোগ দখলে রয়েছেন। ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট ব্যগক্তিদের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সরেজমিনে, তদন্ত করে যথাযথভাবে সীমানা চিহ্নিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।  উপজেলা প্রশাসনের জায়গা যারা ভোগ দখলে রয়েছেন তাদের মধ্যে দুইজন উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং তারা সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন থেকেও তাদের স্বাগতম জানানো হয়েছে।  সম্প্রতি উপজেলা সংলগ্ন ফসলান্দি মৌজার ২টি দাগে মোট ৮ শতাংশ জমি উপজেলা পরিষদের সম্পত্তি হিসেবে নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ দুই দাগের কার্যক্রম ইতোমধ্যে হাতে নিয়েছে প্রশাসন।

বাকি জমিগুলো চিহ্নিতকরণ ও উদ্ধারের কাজও চলছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলা সদর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকা এসব জমির ওপর ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক স্থাপনা, বসতবাড়ি, দোকানঘর গড়ে ওঠেছে। কোথাও আবার রয়েছে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দখল। তবে প্রশাসন বলছে, দখলদার যেই হোক, সরকারি জমি উদ্ধার নিশ্চিত করা হবে।  স্থানীয়রা বলছেন, বহু বছর ধরে সঠিকভাবে সার্ভে ও পরিমাপ না হওয়ায় সরকারি সম্পদ ব্যক্তিমালিকানার আওতায় চলে গেছে।

নতুন পরিমাপে বেরিয়ে আসছে উপজেলার নিজের সম্পদ দখলে নেই—এমন অস্বস্তিকর বাস্তবতা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো চাঁদ মিঞা বলেন, উপজেলা পরিষদের জায়গা মানেই সরকারি স্বার্থ জড়িত। সরকারি জায়গা বেদখলে রাখার কোন সুযোগ নেই। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠি দখলে থাকলে ইচ্ছেকৃত ভাবে দখল না ছাড়লে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করার দাবী জানাই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান বলেন, উপজেলা পরিষদের বেশ কিছু জায়গা কিছু অসাধু ব্যক্তি অন্যায় ও অবৈধভাবে ভোগ দখলে রেখেছে। ইতোমধ্যে আমরা সেগুলো উদ্ধারের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।  সার্ভে অনুযায়ী যেসব জমি আমাদের মালিকানাধীন, সেগুলো একে একে চিহ্নিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে কিছু জমি উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকি অংশও আইনি প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনা হবে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়