বৃহস্পতিবার, ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের বৈঠক বাতিলের দাবিতে বান্দরবানে সংবাদ সম্মেলন

আব্দুল আওয়াল আলিফ, বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের বৈঠক বাতিল ও ৮দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বান্দরবানে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ বান্দরবান পার্বত্য জেলা এর আয়োজনে স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টের হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ এর নেতৃবৃন্দরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ৫২% বাঙালি জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে জানাচ্ছি যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৬ নামে যে কমিশন গঠন করা হয়েছে সেখানে পার্বত্য বাঙালিদের কোন প্রতিনিধি নাই। কমিশনের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহিত হবার আইন থাকায় এই কমিশন থেকে একপেশে যেকোন ধরনের সিদ্ধান্ত আসার আশঙ্কা রয়েছে। এই ধরণের একপেশে সিদ্ধান্তের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বৃহৎ বাঙালি জনগোষ্ঠী ভূমিহীন হয়ে যেতে পারে বলে আশংঙ্কা রয়েছে।

এসময় বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের ৯জন সদস্যের মধ্যে ৩ জন সার্কেল চীফ (রাজা), ৩ জন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ১ জন আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সহ মোট ৭ জনের সবাই উপজাতি। ১ জন কমিশনের চেয়ারম্যান ও অন্য ১জন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার। এতেই পরিষ্কার বুঝা যায় যে, ভূমি কমিশনে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ৫২% বাঙালি জনগোষ্ঠীর কোন প্রতিনিধি নাই। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত বাঙালিরা এই আইন ও কমিশনের মাধ্যমে তাদের ভূমির অধিকার হারাবে বলে আমরা উৎকণ্ঠিত। ভূমি কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ না রাখায় এটি একপেশে ও সংবিধান পরিপন্থি একটি ধারা ও একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা আঁকা হয়েছে।

এসময় বক্তারা আরো বলেন, আগামী ১৯অক্টোবর সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের শাখা কার্যালয়ে কমিশনের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে কমিশনের সকল সদস্যগণের নিয়ে এক সভা আহবান করা হয়েছে, উক্ত সভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠী চরমভাবে ক্ষুব্ধ। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) ঘোষিত ৮দফা দাবি মানার আগ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের কোনো বৈঠক করা যাবে না। অন্যথায় সভাস্থল ঘেরাও, অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করবে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)।

এসময় বক্তারা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনে জনসংখ্যা অনুপাতে সকল জাতি গোষ্ঠী থেকে সমান সংখ্যক সদস্য নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি এর কার্যক্রম শুরুর পূর্বে, ভূমির বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভূমি জরিপ সম্পন্ন করা, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ভূমির উপর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ভূমি কমিশন সংশোধনী আইন ২০১৬ এর ধারাসমূহ বাতিল করা, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ব্যবস্থাপনা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রবর্তন করা এবং সমতলের ন্যায় জেলা প্রশাসকগণকে ভূমি বিরোধ নিস্পত্তির অধিকার দেয়া, কমিশন কর্তৃক ভূমি বিরোধ নিস্পত্তির কারনে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হলে তাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারি খাস জমিতে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ২০০১ সালের ভূমি কমিশন আইন অনুযায়ী বলবৎ করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত রীতি, প্রথা ও পদ্ধতির পরিবর্তে দেশে বিদ্যমান ভূমি আইন অনুসারে ভূমি কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং বাংলাদেশ সরকারের আদেশ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক কর্তৃক বন্দোবস্তীকৃত, অথবা কবুলিয়ত প্রাপ্ত মালিকানা থেকে কাউকে উচ্ছেদ না করার জন্য ৮দাবি উৎথাপন করেন।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) এর সহ-সভাপতি জমির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন,সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর হোসেন ইমন, যুব পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো.ইব্রাহীমসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) এর বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়