আলফাডাঙ্গায় শিশু জায়ান হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত খুনিদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে
আলমগীর কবির, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সাত বছর বয়সী শিশু জায়ান রহমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রকৃত খুনিদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সমাজসেবামূলক সংস্থা কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও দৈনিক ঢাকা টাইমসের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলন।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে আলফাডাঙ্গা সদর বাজার চৌরাস্তায় জায়ান রহমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্যে আরিফুর রহমান দোলন বলেন, “আমরা শুধু এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েই থেমে থাকতে চাই না। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা এতে জড়িত, সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সফল হবে—এই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জায়ানের প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের কল্যাণে এক কাতারে দাঁড়িয়ে সমাজের বিরুদ্ধে চলা সব অপকর্মের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, সেদিকেও আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
দোলন বলেন, এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে কোনো অশুভ চক্র যেন রাজনৈতিক বা অন্য কোনো স্বার্থে ফায়দা লুটতে না পারে, সেটাও আমাদের দায়িত্ব। আগামীর বাংলাদেশ যেন অন্যায় ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে পারে, সেই সূচনা আজ আমাদের এখান থেকেই করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর ক্ষুদ্র স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াতে পারি, তাহলে অবশ্যই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
বক্তব্যের শেষে তিনি জায়ান হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং একই সঙ্গে দ্রুত বিচার নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামে গ্রিস প্রবাসী পলাশ মোল্যার সাত বছর বয়সী ছেলে জায়ান রহমানের ঝুলন্ত মরদেহ বাড়ির পাশের একটি বাগান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দিনই নিহতের মা সিনথিয়া বেগম অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
তদন্তে ঝুলন্ত রশিটি গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে পুলিশ চিহ্নিত করে। অনুসন্ধানে পাশের টাবনী বাজারের একটি মুদি দোকান থেকে ওই রশি কেনার তথ্য পাওয়া যায়। পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে প্রতিবেশী ইউনুচ মোল্যা মফিজ খানের দোকান থেকে রশি কিনেছিলেন, যা উদ্ধার হওয়া রশির সঙ্গে মিল রয়েছে। এই সূত্র ধরে ইউনুচ মোল্যাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
শিশু জায়ান হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিত এ মানববন্ধনে আরো আরোও অংশ গ্রহণ করেন জায়ানের মাতা সিনথিয়া, চাচা হাবিবুর রহমান, শাশীম মোল্লা, দাদা বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোল্লা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূর জামাল খসরু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম খোসবুর রহমান খোকন, পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আমিনুর রহমান সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ দলবল নির্বিশেষে অংশ গ্রহণ করেন।
মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারী প্রতিবাদ মূখর সকলে আলফাডাঙ্গা থানার ভীতরে গিয়ে মিছিল সহ জায়ান হত্যাকারীদের গ্রেফতারে বারবার স্লোগান দিতে থাকে।
একপর্যায়ে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই লিয়াকত হোসেন সকল কে আশ্বস্থ করে বলেন এ মামলায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকীদের কে গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে ।



সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।