বৃহস্পতিবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

এক সেনার মৃত্যুর প্রতিশোধে ১০৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরায়েল

সংবাদের আলো ডেস্ক: গাজায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহতের পর ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে ৪৬ শিশু ও ২০ জন নারী রয়েছেন। সূত্র: রয়টার্স

বুধবার (২৯ অক্টোবর) ইসরায়েল জানায়, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি এখনও বহাল রেখেছে তারা। তবে সেনা হত্যার ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়ার কাছে অস্ত্রভাণ্ডারে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।

মঙ্গলবার গাজায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার ঘটনাটি সেখানে সহিংসতার সবচেয়ে ভয়াবহ উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই বছরের যুদ্ধ শেষে অক্টোবরের ১০ তারিখে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর এমন পরিস্থিতি আর দেখা যায়নি।

ইসরায়েলের অভিযোগ, মঙ্গলবার গাজায় ‘ইয়েলো লাইন’-এর ভেতরে হামলা চালিয়ে তাদের এক সেনাকে হত্যা করে হামাস। তবে হামাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বুধবারের হামলাকে উত্তরে বেইত লাহিয়ার কাছে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসরায়েল, যেখানে তারা বলেছে অস্ত্র মজুদ করা হয়েছে। তারা বলেছে যে তারা যেকোনো লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমরা যে লক্ষ্য নিয়েছি—গাজা থেকে হামাসকে নিরস্ত্র করা ও অঞ্চলটি সামরিকভাবে নিরপেক্ষ রাখা—তা নিশ্চিত করা হবে।”

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস কমান্ডারকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। সৈনিকের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায়, সেনাবাহিনী ছিটমহল জুড়ে কয়েক ডজন হামাস জঙ্গি, সেই সঙ্গে গ্রুপের অস্ত্রের ডিপো এবং টানেল লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

এতে ২৪টি জঙ্গি লক্ষ্যবস্তুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি হামাস কমান্ডার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলায় অংশ নিয়েছিলেন।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ১০৪ জনের মধ্যে ৪৬ জন শিশু এবং ২০ জন মহিলা রয়েছে। গাজার নুসাইরাতে এক হামলায় পুরো আবু দালাল পরিবার নিহত হয়েছে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা মরদেহগুলো নিয়ে শোক মিছিল বের করেন স্থানীয়রা।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় ইসরায়েলি দাবি প্রত্যাখ্যান করে এক বিবৃতিতে বলেছে, “এটি ইসরায়েলের ধারাবাহিক মিথ্যাচার, যার উদ্দেশ্য বেসামরিক লোকজনের ওপর চালানো যুদ্ধাপরাধ ঢেকে রাখা।”

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো ঝুঁকিতে নেই। তিনি বলেন, “ইসরায়েলিরা যখন আক্রান্ত হবে, তখন পাল্টা জবাব দেবে—এটাই স্বাভাবিক।”

ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি-বন্দী বিনিময় চুক্তিকে তার দ্বিতীয় মেয়াদের শীর্ষ পররাষ্ট্র নীতি অর্জনগুলির মধ্যে একটি হিসাবে তুলে ধরেন। এদিকে মধ্যস্থতাকারী কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি এই সহিংসতাকে “অত্যন্ত হতাশাজনক ও উদ্বেগজনক” বলে উল্লেখ করেছেন।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়