মঙ্গলবার, ২রা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৫০ জনের পদত্যাগের প্রেক্ষিতে যা বলছে নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫০ জনের পদত্যাগের প্রেক্ষিতে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে বর্তমান নেতৃত্ব। তারা বলেন, পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া প্রাক্তন নেতাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর। সোমবার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টায় সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আহ্বায়ক মো. মুনতাছির হাসান মেহেদী বলেন, তারা যদি ৫০ জন পদত্যাগ করতে চাই, আমরা ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫ হাজার ছাত্র জনতার স্বাক্ষর নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দিতে পারব।

তিনি আরও বলেন, আগের পদত্যাগকারীদের প্রশ্ন ছিল, ‘কত টাকার বিনিময়ে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে?’ এই প্রশ্নের জবাবে আমি বলতে চাই, ‘চাঁদাবাজ মাহিন সরকার (এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব) যত টাকায় আগের কমিটি দিয়েছিল, মাশরাফি সরকার (বৈছাআ’র উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত) ঠিক সেভাবেই ১৫ জন শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই নতুন কমিটি অনুমোদন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, নতুন কমিটি ঘোষণার পর কিছু প্রাক্তন নেতা হঠাৎ সংবাদ সম্মেলন করে গণপদত্যাগের ঘোষণা দেন। সেই সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য এবং বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় কমিটি যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমেই সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটির ২০৪ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করেছে, এখানে কোনো একতরফা সিদ্ধান্ত নেই।

নেতারা বলেন, কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ বলা ভিত্তিহীন অভিযোগ। কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পুরোনো কমিটিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবসায়িত করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। পুরোনো কমিটিকে বলপূর্বক বাদ দেওয়া হয়নি এবং কোনো গোপন প্রক্রিয়াও অনুসরণ করা হয়নি।

বিতর্কিত ব্যক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বর্তমান নেতৃত্ব জানায়, কমিটির সদস্যরা কেউই আদর্শবিরোধী নন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সংগঠনের নিজস্ব তদন্ত কাঠামো আছে, তার মাধ্যমে যাচাই করা হবে। অভিযোগ ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা সংগঠনবিরোধী তৎপরতা ছাড়া কিছু নয়।

তারা আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর একটি পরিকল্পিত চেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। সংগঠন কখনোই ফেসবুকভিত্তিক রাজনীতি সমর্থন করে না। কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী – সামাজিক মাধ্যমে নয়।

প্রাক্তনদের দাবি করা ‘৫০ জন নেতা পদত্যাগ’ সংখ্যাটি নিয়েও প্রশ্ন তোলে বর্তমান কমিটি। তাদের দাবি, যাদের অনেকেই দায়িত্বশীল পদে ছিলেন না, কেউ কেউ আগে থেকেই নিষ্ক্রিয় ছিলেন। তাই ৫০ জন বলাটা অতিরঞ্জিত।

সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটির আহ্বায়ক মো. মুনতাছির হাসান মেহেদী, সদস্য সচিব মাসুদ রানা, মুখ্য সংগঠক সালমান জোয়ারদার, মুখপাত্র রাজিয়া ভূইঁয়া রাজিতাসহ সংগঠনের অনেক সক্রিয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হলেও বঞ্চিতদের টানা আন্দোলনের মুখে দুইদিন পর ১০ ফেব্রুয়ারি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। পরে ২৭ জুলাই দেশের সব কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া অন্য কোনো শাখার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ২ নভেম্বর স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে সারাদেশে নতুন কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রাতে ছয় মাস মেয়াদী সিরাজগঞ্জের নতুন কমিটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় কমিটি।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়