মঙ্গলবার, ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ধর্ষণের পর কিশোরীর মৃত্যু শনিবার রাতে গ্রামের বাড়ীতে দাফন সম্পন্ন

পুনম শাহরীয়ার ঋতু, স্টাফ রিপোর্টার: ধর্ষনের পর কিশোরী জোনানির মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে দুইজনকে আসামী করে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন কিশোরীর বাবা। শনিবার দুপুরের পর গাজীপুর ময়না তদন্তের পর কিশোরীর লাশ নিয়ে স্বজনরা গ্রামের বাড়ী গাইবান্ধায় নিয়ে যায়। সেখানে রাত সাড়ে সাতটার দিকে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।অপর দিকে শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত দুই যুবক মুমিনুল ইসলাম মোহন ও আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। মৃত কিশোরী হলো গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নয়াপড়া কৃষ্ণপুর গ্রামের জুবায়দুল ইসলামের মেয়ে জোনাকি (১৭)। দুই বোনের মধ্যে জোনাকি হলো ছোট। সে আশুলিয়া থানার ডিসেন্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল।

জোনাকির পরিবারের লোকজন জানায়,গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জোনাকি কোচিং সেন্টার থেকে মুমিনুল ইসলামের সাথে বের হয়। তাকে ওই রাতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকালে মির্জাপুর থানা থেকে বিষয়টি জানানো হয় যে জোনাকি মারা গেছে। এসময় জোনাকির বাবা জুবায়দুল ইসলাম সেখানে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন। পরে মির্জাপুর থানা পুলিশ দুই যুবককে আটক করে কালিয়াকৈর থানায় সোর্পদ করেন। কালিয়াকৈর থানা পুলিশ জানায়, মুল আসামী মুমিনুল ইসলাম মোহন জোনাকিকে চন্দ্রা এলাকার মান্নান প্লাজার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে শারীরিক মিলন করে। এসময় জোনাকির অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়াতে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ আরো জানায়, মুমিনুল ইসলামকে এসব কাজে সহযোগিতা করার জন্য আতিকুল ইসলাম নামের আরেক যুবককে একই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জোনাকির বড় বোন সম্পা আক্তার বলেন গত এক বছর ধরে আমার ছোট বোনকে নানাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ বিষয়টি নিয়ে মুমিনুলকে একাধিকবার নিষেধ করার পরও আমার ছোটকে বিরক্ত করতো। আমার বোনকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে চন্দ্রাতে নিয়ে মেরে ফেলেছে। আামি ওই দুই আসামীর ফাঁসি চাই। জোনাকির বাবা জুবায়দুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, আমার অনেক স্বপ্ন ছিল জোনাকিকে চিকিৎসক বানাব। কিন্তু মুমিনুল ইসলাম আমার মেয়েকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই। উল্লেখ্য,গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত দুই যুবক কিশোরীকে নিয়ে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকার আব্দুল মান্নান প্লাজার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে মুুমিনুল ইসলা মোহন জোড়র্প্বূক একাধিকবার ধর্ষণ করে। এসময় ওই কিশোরীর সাথে একাধিকবার ধর্ষণের পর রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

পরে আবাসিক হোটেলের নীচে অপেক্ষামান আতিকুর রহমানসহ কিশোরীকে একটি ওষধের দোকানে নিয়ে যায়। সেখানে কিছু ওষধ ব্যবহার করার পরও রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে একটি অটোরিক্সা করে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে রাতেই নিয়ে যায়। সেখানে কিশোরীকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা কিশোরীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় ঢাকা নিয়ে যেতে বলেন। এসময় ওই দুই যুবক কিশোরীকে একটি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যায়। বিষয়টি এ্যাম্বুলেন্স চালক টের পেয়ে কৌশলে এ্যাম্বুলেন্সটি ঘুরিয়ে মির্জাপুর থানায় নিয়ে যায়।  এব্যাপারে কালিয়াকৈর থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইউসুফ আলী বলেন, এঘটনায় কিশোরীর বাবা একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। দুপুরের পর গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জোনাকির ময়না তদন্ত শেষে লাশ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে গেছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়