সোমবার, ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

লালমনিরহাটে তিস্তায় পানি কমলেও, বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটে তিস্তার উজান থেকে হু হু করে ধেয়ে আসা পানির কারণে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে টানা চারদিন ধরে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে কিন্তু আজ সকাল থেকে তিস্তায় পানি বিপদ সীমার নিজ দিয়ে কমলেও, বেড়েছে মানুষের  আর দুর্ভোগ  দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই

শুক্রবার (১৫আগস্ট) দুপুর ২ টায় জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১দশমিক ৯২মিটার, যা বিপৎসীমার ২৩সেন্টিমিটার  নিচে
তিস্তা নদীপাড়ের মানুষ ও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, চারদিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সোমবার (১১ আগস্ট) রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে তা টানা তিনদিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তার পানি বাড়ার ফলে লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার বেশ কিছু এলাকা বন্যাকবলিত হয়েছে।

ফলে নদীর দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে নতুন নতুন এলাকা ডুবে গেছে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় ১০ হাজার মানুষ
এর মধ্যে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈলমারী, নোহালী, আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্দ্ধন, বাহাদুরপাড়া,  সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
টানা চারদিনের বন্যায় পানিবন্দি পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
গবাদিপশু, বৃদ্ধ, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের মানুষ। 

চারপাশে শুধু পানি—বাড়ির ভেতরে বিছানার ওপর মাচা বানিয়ে গৃহিণীরা দিনে একবার রান্না করছেন, কেউ কেউ উঁচু রাস্তা বা বাঁধে চুলা বসিয়ে রান্না করছেন। বাঁধ ও রাস্তার ধারে পলিথিনের তাঁবু টাঙিয়ে রাখা হচ্ছে গবাদিপশুগুলোকে। সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনায় পড়েছেন
গোবর্দ্ধন গ্রামের ফরিদ মিয়া বলেন, চারদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছি। চারদিকে শুধু পানি। উজানের ঢলে তিস্তা গর্জে উঠেছে, ভয়ংকর রূপ নিয়েছে নদী। নির্ঘুম রাত কাটছে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর।
হাতীবান্ধা গড্ডিমারী  গ্রামের সালমা বেগম বলেন, রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। আমাদের গ্রামের সব বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর পানি। রান্না, খাওয়া, থাকা, শৌচকর্ম—সবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রাতে ঘুমাতে পারিনি। বাচ্চাদের নিয়ে আতঙ্কে থাকি, কখন কে পানিতে পড়ে যায়
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার জানান, বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বাড়ছে।

চারদিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তিস্তাপাড়ের নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে।  এখন তিস্তার পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে  প্রবাহিত হচ্ছে পরিস্থিতির উন্নতি হতে কিছুটা সময় লাগবে, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে তিস্তার পানি ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে  প্রবাহিত হচ্ছে  আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি,
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) এইচ,এম, রকিব হায়দার বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে কিছু শুকনো খাবার ও জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে,বানভাসি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও জিআর চাল বিতরণ কাজ চলমান রয়েছে  আরও শুকনো খাবারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।

সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

এই সপ্তাহের পাঠকপ্রিয়