আমতলী ইউএনও’র বিদায়ে কাঁদলেন এলাকাবাসী


আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: নিজে কাঁদলেন, অন্যদেরও কাঁদালেন। সহকর্মী ও উপজেলাবাসীর কাছ থেকে অশ্রুসিক্ত বিদায় নিলেন বরগুনা আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বিদায়বেলায় দেখা গেলো হৃদয়বিদারক এক দৃশ্য। এই কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়ে চলে যাচ্ছেন – এ খবরে উপজেলা চত্বরে উপস্থিত বেশিরভাগ মানুষের চোখেই ছিল অশ্রুসিক্ত। আবেগ থামাতে না পেরে কেঁদে ফেলেন অনেকেই। তৈরি হয় আবেগঘন এক পরিবেশ।
এ সময় উপজেলা পরিষদে সর্বস্তরের মানুষ জড়ো হয়ে তার গাড়ির গতিরোধ করে যেতে বাঁধা প্রদান করে। পরবর্তীতে ৪ ঘন্টা পারে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তিনি উপজেলা চত্বর ত্যাগ করেন।
জানা যায়, ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর মুহাম্মদ আশরাফুল আলম আমতলী উপজেলার নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। দায়িত্ব পালন করেন ২ বছর ৪ মাস। অল্প দিনের মধ্যেই তার সততা ও দক্ষতায় কঠোর প্রশাসকের সুনাম- সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। উন্মুক্ত হয়ে যায় তার কার্যালয়ের মুল ফটক। সকল শ্রেনীর মানুষের আশ্রয়স্থল হয় তার কার্যালয়ে। তাকে কাজে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেন ইউএনও। তার এমন কর্মদক্ষতায় পাল্টে যায় আমতলীর দৃশ্যপট। আমতলী উপজেলার অন্তত অর্ধ লাখ প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সেবা দিয়েছেন তিনি। যা আমতলীর ইতিহাসে বিরল। তার এমন অভুতপুর্ব কাজে খুশি আমতলী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা জানান, যখনই কোথাও কোনো সংকট দেখেছেন, তখনই ছুটে গেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছেন সবার বিপদ-আপদে। উপজেলার সাধারণ মানুষদের আস্থার জায়গায় ছিলেন তিনি।
বৈষম্য আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ইউএনও স্যার আমতলী উপজেলায় যোগদান করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরগুলোতে ঘুষ দুর্নীতি মুক্ত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। আমার চোখে তিনি একজন সফল ইউএনও।
স্থানীয় সংবাদকর্মী ও প্রভাষক মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, এমন মানবিক গুণসম্পন্ন ইউএনওর কথা ভোলা যায় না। তার সততা, কর্মনিষ্ঠায় আমি মুগ্ধ। তার মতো ইউএনও যদি প্রতিটি উপজেলায় থাকত, তাহলে মানুষ অতি সহজে সেবা পেত।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আমতলী উপজেলায় যে কাজ করেছি, তা সম্ভব হয়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ ও সহকর্মীদের সহায়তায়। যে কাজটি করেছি আন্তরিকতা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে করার চেষ্টা করেছি। বদলিতো চাকরিরই অংশ। তবে আমতলী বাসির মন জয় করতে পেরেছি এটাই বড় পাওয়া।
সংবাদের আলো বাংলাদেশ সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।