
আলমগীর কবির, ফরিদপুর প্রতিনিধি: যেখানে আগে কেরোসিনের চেরাগ জ্বলে অন্ধকারে রাত কাটত, আজ সেখানে বিদ্যুতের আলো ঝলমল করছে। বিদ্যুতবিহীন, অন্ধকারাচ্ছন্ন ভাঙা ঘরটি এখন লাল, সবুজ ও সাদা রঙের মিশ্রণে নতুন জীবন পাচ্ছে।
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পবনবেগ গ্রামের বিধবা সূর্য বেগম আজ পেলেন ‘চাদনী’ নামে নতুন ঘর, যা ইউএনও রাসেল ইকবালের সুদৃষ্টিতে নির্মিত হয়েছে।
নতুন ঘরের চাবি হাতে পেয়ে সূর্য বেগম আবেগে কেঁদে কেঁদে বলেন,নতুন ঘর কেবল ছাদ নয়, বরং আশা, সুরক্ষা ও জীবনের নতুন আলো এনেছে। এত বছরের কষ্ট, ভয় এবং অন্ধকারকে বিদায় জানিয়ে আজ আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারব।
সূর্য বেগম দীর্ঘদিন একমাত্র টিনের ঘরে বসবাস করছিলেন। ছাদের টিন ভেঙে পড়ার ভয়ে বহু রাত নির্ঘুম কাটাতে হয়েছে। বৃষ্টি হলে ঘরে পানি ঢুকে, ঘর ভেঙে যাওয়ার ভয়ে বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঘর ঠেকানো হতো। ৪০ বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র মেয়ে আছমা বেগমকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর মেয়েকে বিবাহ দেন। পরে আছমার স্বামীর মৃত্যু ও মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে জীবন অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।
নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তরকালে ইউএনও রাসেল ইকবাল বলেন,সবার জন্য নিরাপদ ও মানসম্মত বাসস্থান নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা আশা করি, এই ঘর সূর্য বেগমের জীবনে নতুন আশার আলো নিয়ে এসেছে।
উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাগর হোসেন সৈকত বলেন,ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের টিআর প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে আধা-পাকা ঘর, সংযুক্ত বাথরুম, বিদ্যুতের লাইন সংযোগসহ লাইট, ফ্যান, খাবারের প্যাকেট ও কম্বলসহ উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা আরও বহু হতদরিদ্রকে এই সহায়তা পৌঁছে দিতে চাই।
এ সময় স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য কোহিনুর বেগম, সাংবাদিক মোঃ শাহারিয়ার হোসেন এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
নতুন ঘর সূর্য বেগমের জন্য কেবল ছাদ নয়, বরং আশা, সুরক্ষা এবং জীবনের নতুন আলো এনে দিয়েছে—যা স্থানীয় মানুষের মধ্যে মানবিক সহমর্মিতা ও উদারতার উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে রয়ে যাবে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.