সংবাদের আলো ডেস্ক: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমেছে। তবে কী কারণে এইচএসসির ফলাফল খারাপ হয়েছে, আগামী সপ্তাহেই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আববার (সি আর আবরার)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এইচএসসির ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এবারের এইচএসসির ফলাফল অস্বস্তিকর। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ধরনের ফলাফলের দায় এড়াতে পারে না। তবে এবারের ফলাফল হয়েছে বাস্তবভিত্তিক। কেন এ ধরনের ফলাফল হয়েছে, তার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ডাটাভিত্তিক পর্যালোচনা করা হবে।
আগে পাসের হার এবং জিপিএ-৫ এর সংখ্যাই ছিল তৃপ্তির মানদণ্ড মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, আমরা চাই শিক্ষার ফলাফল আবার বাস্তবতায় ফিরে আসুক। দেশে ফলাফলের এমন এক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, যেখানে সংখ্যাই বড় সত্য হয়ে উঠেছিল।
তিনি বলেন, ফলাফল ভালো দেখাতে গিয়ে শেখার সংকট আড়াল করার এই সংস্কৃতি আমরা বন্ধ করতে চাই। চাই, শিক্ষা ব্যবস্থা আবার বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করুক।
উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষকদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, বিশেষ করে এইচএসসিতে সীমান্তরেখায় থাকা শিক্ষার্থীদের প্রতি যেন ন্যায্যতা বজায় রাখা হয়।
চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ।
গতবারের তুলনায় এবার পাসের হার কমেছে ১৯ শতাংশ। ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।
পরে পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ব্রিফিং করেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল হক।
তিনি জানান, এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেন ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন। ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন শিক্ষার্থী।
তিনি আরও জানান, এবার ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৬৪.৬২, রাজশাহীতে ৫৯.৪০, কুমিল্লায় ৪৮.৮৬, যশোরে ৫০.২০, চট্টগ্রামে ৫২.৫৭, বরিশালে ৬২.৫৭, সিলেটে ৫১.৮৬, দিনাজপুরে ৫৭.৪৯, ময়মনসিংহে ৫১.৫৪, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ৭৫.৬১ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৬২.৬৭।
খন্দোকার এহসানুল হক জানান, এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন।
এদিকে ২০২৪ সালে জিপিএ-৫ পান ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। গতবারের তুলনায় এবার জিপিএ-৫ কমেছে অর্ধেকেরও বেশি।
খন্দোকার এহসানুল হক জানান, পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুই ক্যাটাগরিতেই এগিয়ে মেয়েরা। এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল করেছে। ৩৪৫ প্রতিষ্ঠানে সবাই পাস করেছে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.