বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি: এক সময় যে তরুণ নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই নাইমুল কবির ইসলাম নাইম (৩১) এখন জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে। ২০২৩ সালে ঢাকায় চাকরি শুরু করার কিছুদিন পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বমি, মাথা ঘোরা ও দুর্বলতার পর চিকিৎসা করালে জানা যায়—তার দুটি কিডনিই বিকল হয়ে গেছে।
এরপর থেকে শুরু হয় এক কঠিন সংগ্রাম। নিয়মিত চিকিৎসা, ওষুধ আর ডায়ালাইসিসের ভারে ধীরে ধীরে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি। আগে মাসে তিনবার ডায়ালাইসিস করা হতো, এখন খরচের অভাবে তা দুইবারে নেমে এসেছে। প্রতিবারই ধার করে চলছে চিকিৎসা।
নাইমুল নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌরসভার সোনাপাতিল মহল্লার নজরুল ইসলাম (৫২) ও লিপি খাতুন (৪৬) দম্পতির একমাত্র সন্তান। বাবা এখন বেকার, মা দিনরাত ছেলের চিন্তায় অস্থির। নাইমুল বলেন, “আগে নিয়মিত মসজিদে নামাজ পড়তাম, এখন আজান শুনেও যেতে পারি না। শরীর এমন দুর্বল যে হাঁটতেও কষ্ট হয়। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই, কিন্তু চিকিৎসার ব্যয় সামলাতে পারছি না।”
বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, “ছেলেকে মানুষ করতে যা ছিল সব ব্যয় করেছি। এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। একমাত্র সন্তানের এমন কষ্ট সহ্য করা অসম্ভব। আমি শুধু দোয়া ও একটু সহযোগিতা চাই।”
মা লিপি খাতুন কান্নাভেজা কণ্ঠে জানান, “ছেলের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। খেতে পারে না, পেট ফুলে থাকে, দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। ডাক্তার বলেছেন সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস দরকার, কিন্তু আমরা পারছি না। চিকিৎসা করতে গিয়ে ঋণে ডুবে গেছি।”
স্থানীয় সাবেক মহিলা কাউন্সিলর মুর্শিদা বেগম বলেন, “নজরুল সাহেবের ছেলেটি ভদ্র ও পরিশ্রমী। তাদের যা ছিল সবই ছেলের চিকিৎসায় শেষ হয়ে গেছে। সবাই মিলে একটু সহায়তা করলে হয়তো ছেলেটিকে বাঁচানো সম্ভব।”
আজ সময় এসেছে মানবিকতার হাত বাড়ানোর। একটুখানি সহযোগিতা হয়তো ফিরিয়ে দিতে পারে এক তরুণের জীবনের আলো, এক মায়ের মুখের হাসি, আর এক বাবার শান্তির ঘুম।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.