শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরের নকলায় জমি জবর দখল এবং আত্মসাতের মামলায় যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন আনারকে কারাগারে প্রেরন করেছে আদালত। গতকাল সোমবার (৫ মে) দুপুরে নকলার সিআর আমলী আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভপর্ণা চন্দ যুবদল নেতা আনারের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেয়।
আজ মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর ১ টায় বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবি এড.তাজুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী তাজুল ইসলাম (৪৫), পিতা মৃত বদিউজ্জামান, স্থায়ী ঠিকানা বানেশ্বর্দী খন্দকারপাড়া, নকলা শেরপুর। একই থানার অন্তর্গত মৌজা বানেশ্বর্দী বিআরএস ৪৪১ নং খতিয়ানে বিআরএস ১০৮ নং দাগে ১ দশমিক ৫১ একর জমি বানেশ্বর্দী খন্দকারপাড়ার বাসিন্দা ইব্রাহিমের নামে রেকর্ডভূক্ত হয়। ইব্রাহীমের মৃত্যুর পর তার সন্তানেরা পৈত্রিক ওয়ারিশসূত্রে ভোগদখল করে আসছিল। ভোগদখল ও স্বত্ববান থাকা অবস্থায় মৃত ইব্রাহীমের কন্যা হনুফা খাতুন বিআরএস ১০৮ দাগে ০৩ শতাংশ জমি বাদীর বড় ভাই আলী হোসেনের কাছে বিক্রি করে। জমি ক্রয়ের পর আলী হোসেন সেই জমিতে মাটি ভরাট করে একটি দোকান ভাড়া এবং অন্যটিতে নিজ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল।
পরবর্তীতে দীর্ঘ ১৯ বছর ভোগ দখলের পর আলী হোসেনের টাকার প্রয়োজনে উক্ত জমি দোকানসহ আপন ছোট ভাই তাজুল ইসলামের কাছে হেবা সূত্রে বিক্রয় করে। যাহার দলিল নং ৩২৩৩ এবং বিআরএস দাগ নং ১০৮। পরে তাজুল ইসলাম উক্ত জমি ক্রয়ের পর বিগত ২৪ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখে নকলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস গিয়ে দোকান সহ জমি ক্রয় করে উক্ত দলিলের সঠিকতা যাচাই করি নিজ নামে ১৮৭০ (IX-I) ২০২৩-২০২৪ ইং মিস কেইস মূলে নামজারী খারিজ খতিয়ান খুলে ভোগদখল ও স্বত্ববান হয়ে আসছিল।
এমতাবস্থায় গত বছরের ১৬ আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখে বিকেলে মামলার ১নং বিবাদী খন্দকার নূরুল আমীন ও তার ছেলে ২নং বিবাদী আনোয়ার হোসেন আনার একযোগে দেশীয় অস্ত্রসহ সজ্জিত হয়ে বেআইনীভাবে বাদীর উক্ত ০৩ শতাংশ জমির মধ্যে ২.৫০ শতাংশ ভূমি জোরপূর্বক দখল করে এবং বাদীর উক্ত দোকানঘর ভেঙ্গে পুনরায় দোকান ঘর নির্মাণ নিজের নামে প্রচার করে।
পরবর্তীতে বাদীকে তার ভাই খন্দকার আলী হোসেন মোবাইল ফোনে সংবাদ দিলে পরের দিন বাদী বাড়িতে এসে এলাকার গন্যমাণ্য ব্যাক্তিসহ সাক্ষীদের সাথে নিয়ে গ্রাম্য শালিশীতে বসে। ওইদিন বাদীর দোকানঘর বেদখলের কারণ জিজ্ঞাসা করলে ও বাদীর উক্ত জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করলে বিবাদীদ্বয় বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারপিট করতে উদ্যত হয় এবং প্রাণ নাশের হুমকী প্রদান করে। পরে নিরাপত্তার স্বার্থে মামলার বাদী তাজুল ইসলাম চলতি বছরের গত এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে নকলার বিজ্ঞ সি আর আমলী আদালতে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের ২০২৩ এর ৪(২)/৭ (৩)/১৬ ধারায় খন্দকার নরুল আমিন ও তার ছেলে যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন আনারের নামে মামলা দায়ের করেন।
এবিষয়ে তৎকালীন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুবায়ের আহমদ রনির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জমিটি মূলত মামলার বাদী তাজুল ইসলামের দখলে ছিল। তিনি এই জমি হেবা সূত্রে তার বড় ভাই আলী হোসেনের কাছ থেকে ক্রয় করে। এসব তথ্য পর্যালোচনা করে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
সংবাদটি শেয়ার করুন।
Copyright © 2025 সংবাদের আলো. All rights reserved.